রাতের বেলা গাছের নিচে থাকা স্বাস্থ্যকর নয় কেন
- আপডেট সময় : ০২:২৯:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪ ১৮ বার পড়া হয়েছে
মানুষের অন্যতম প্রাকৃতিক বন্ধু হচ্ছে গাছ। কিন্তু আপনি কি জানেন রাতের বেলা গাছের নিচে থাকা উচিত নয়? দিনের বেলায় আমরা গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিলেও রাতে এই কাজটি করা একদমই স্বাস্থ্যকর নয়। এর বেশ কয়েকটি বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা রয়েছে। চলুন সেগুলো সম্পর্কে জেনে নেই।
দিনের বেলা গাছ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খাদ্য উৎপন্ন করে। তখন কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে এবং অক্সিজেন ত্যাগ করে। আমরা জানি সূর্যালোকের উপস্থিতিতে সবুজ উদ্ভিদ শর্করা জাতীয় খাদ্য তৈরি করে। এরপরে রাতের বেলা আসে শ্বসন ক্রিয়া। এর মাধ্যমে একটি সবুজ উদ্ভিদ শর্করা জাতীয় খাবার গুলোকে শক্তিতে রূপান্তরিত করে। এ সময় গাছ হতে কার্বন ডাই অক্সাইড এবং জলীয় বাষ্পের নির্গমন হয়।
অর্থাৎ দিনের বেলা যে প্রক্রিয়ায় সালোকসংশ্লেষণ ঘটে রাতের বেলায় ঠিক একইভাবে শ্বসন ক্রিয়ায চলে। আর এই কার্বন ডাই অক্সাইড এবং জলীয় বাষ্প আশেপাশের বাতাসের সাথে মিশে যায়। অবশ্য দিনের বেলায় সূর্যালোকের উপস্থিতিতেও কিছু পরিমাণে শ্বসন ক্রিয়া চলে তবে সে পরিমাণ খুবই কম।
তাই আপনি যদি রাতের বেলা গাছের নিচে অবস্থান করেন তাহলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের কারণে আপনার শ্বাসকষ্ট হতে পারে। গাছের পাতায় অত্যন্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এক ধরণের ছিদ্র থাকে যাকে বলা স্টোমাটা। আর কান্ডের ছিদ্রকে বলা হয় লেন্টিসেল। মাধ্যমিক পর্যায়ের বিজ্ঞান বইতে এর সম্পর্কে আরো বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে।
রাতের বেলা গাছের নিচে থাকা স্বাস্থ্যকর নয় কেন
আপনি চাইলে প্র্যাকটিকাল পরীক্ষার মাধ্যমেও বিষয়টি প্রমাণ করতে পারেন। এজন্য আপনার প্রয়োজন হবে একটি ছোট গাছ অথবা তাজা ফুল। ঝরে পড়া হলে চলবে না।
এ ধরনের একটি গাছ বা ফুল একটি কাঁচের অথবা প্লাস্টিকের জারে ভর্তি পানিতে রেখে দিন। কিছুক্ষণ পর দেখবেন নিচে বাতাসের বুদবুদ তৈরি হয়েছে। মূলত অক্সিজেন এবং কার্বন ডাই অক্সাইড বাতাসের তুলনায় হালকা হওয়ায় একটি তৈরি হয়।
অর্থাৎ সেই সবুজ উদ্ভিদকে যখন শরীর থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং অক্সিজেন নির্গমন করে তখন সেটি বুদবুদ তৈরি করে। আর আমরা জানি কার্বন ডাই-অক্সাইড আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। তাই রাতের বেলা গাছপালা থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়।
আমরা জানি মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেন অপরিহার্য উপাদান। এটি ছাড়া মানুষ এবং অনেক প্রাণী বেঁচে থাকতে পারবে না। আর পৃথিবীর যত সবুজ গাছ আছে তারাই বেশিরভাগ এই অপরিহার্য উপাদানটি আমাদেরকে প্রদান করে থাকে। সেই সাথে মানুষকে কার্বন ডাই অক্সাইড দেহ থেকে ত্যাগ করে সেটিও শোষণ করে থাকে গাছ। অর্থাৎ মানুষ এবং গাছের মধ্যে রয়েছে একটি নিবের সম্পর্ক। কিন্তু প্রকৃতিতে গাছপালা কেটে ফেলা এবং বনাঞ্চল নিধন করার কারণে বেড়ে যাচ্ছে কার্বন ডাই অক্সাইড এবং বৃদ্ধি পাচ্ছে বৈশ্বিক তাপমাত্রা। তাই আমাদেরকে এ থেকে বেঁচে থাকার জন্য বেশি বেশি বৃক্ষরোপণ করতে হবে।
সেই সাথে রাতের বেলা গাছের নিচে অবস্থান করা অথবা বনাঞ্চল এলাকা গুলি এড়িয়ে চলা উচিত।
মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা ব্যবস্থায় যুক্ত হচ্ছে আরবি সাবজেক্ট। পুরো খবর জানতে এখানে প্রবেশ করুন।