ঢাকা ০১:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পার্থক্য কি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৫০:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪ ২৪৩ বার পড়া হয়েছে

সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পার্থক্য

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়বস্তু হচ্ছে সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যেও পার্থক্য কি। অনেক সময় আমরা এটি নির্ধারণ করতে ভুল করে ফেলি। সাধারণত সরকার দ্বারা যে সকল প্রতিষ্ঠান গুলি পরিচালনা, কর্মচারীদের বেতন প্রদান ইত্যাদি কার্যকলাপ সম্পন্ন হয়ে থাকে সেগুলোই হচ্ছে সরকারি ইনস্টিটিউট বা প্রতিষ্ঠান।

আবার অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেগুলো ব্যক্তি মালিকানাধীন। সেগুলোর সকল কার্যক্রম প্রতিষ্ঠানটির মালিক পরিচালনা করে থাকে। এই ধরনের প্রতিষ্ঠানকে আমরা বলে থাকি বেসরকারি বা প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান। এটিই হচ্ছে মূল পার্থক্য। তবে এছাড়াও আনুষঙ্গিক অনেক বিষয়াদি আছে। চলুন সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পার্থক্য

আপনারা নিশ্চয়ই সরকারি হাসপাতালের কথা শুনেছেন। প্রতিটি জেলা শহরে একটি বৃহৎ সরকারি জেনারেল হাসপাতাল থেকে থাকে। আপনি যখন এই ধরনের প্রতিষ্ঠান থেকে সেবা গ্রহণ করতে যাবেন তখন খরচ অনেকাংশই কম হবে। কারণ এখানে সরকার ভর্তুকি বা অর্থ বরাদ্দ করে থাকে। ডাক্তার, নার্স ইত্যাদি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনও প্রদান করা হয় সরকারি পক্ষ থেকে। এমনকি হাসপাতালে নানা ধরনের সুবিধা, বড় বড় বিল্ডিং তৈরি, সরঞ্জাম ইত্যাদিও বাজেটের মাধ্যমে প্রদান করা হয়ে থাকে।

কিন্তু আপনি যখন একটি প্রাইভেট হসপিটালে যাবেন তখন অর্থ খরচ অনেকটাই বেড়ে যাবে। কারণ এই প্রাইভেট হসপিটাল হচ্ছে ব্যক্তি মালিকানাধীন। এখানে একজন ব্যক্তি সরকারের অনুমতি এবং যথাযথ শর্ত পূরণ করে হসপিটাল প্রতিষ্ঠা করে। তারপর যাবতীয় খরচ সেই ব্যক্তি বহন করে। আর হসপিটালে থেকে সেবা প্রদান করে যে অর্থ উপার্জন হয় তা মালিক নিজে ভোগ করতে পারে। অবশ্য সেই ইনকাম থেকে সরকারকে যথাযথ প্রদান করতে হয়।

আশা করি এবার আপনি সরকারী ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পেরেছেন।

বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের উদাহরণ হচ্ছে:

জনগণকে সেবা প্রধানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার অনেক প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের হাসপাতাল, স্কুল, কলেজ, আদালত, পাসপোর্ট অফিস, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইত্যাদি গভারমেন্ট প্রতিষ্ঠানের উদাহরণ।

বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উদাহরণ হচ্ছে: প্রাইভেট হসপিটাল, প্রাইভেট স্কুল, পোশাক কারখানা, শপিং মল, বিনোদন কেন্দ্র ইত্যাদি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান। অর্থাৎ যে সকল ইনস্টিটিউট গুলো এক বা একাধিক ব্যক্তির অধীনে গড়ে উঠেছে সেগুলোই প্রাইভেট বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।

সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যেও তুলনামূলক আলোচনা

১। আপনি যেকোনো ধরনের গভারমেন্ট প্রতিষ্ঠান থেকে সেবা গ্রহণ করতে পারবেন খুবই কম খরচে। যেমন সরকারি স্কুল গুলোতে লেখাপড়ার খরচ একদমই কম। কিন্তু প্রাইভেট স্কুল কলেজ গুলোতে অনেক খরচ বহন করতে হয়।

২। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সেবার মান বেশ ভালো হয়ে থাকে। কারণ তাদের লক্ষ্য হচ্ছে জনগণকে সেবা প্রদান করে যথেষ্ট মুনাফা অর্জন করা। অবশ্য বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান গুলোতে উন্নত সেবা পাওয়া যায়।

৩। বিভিন্ন গভর্নমেন্ট ইনস্টিটিউটে নিয়োগ করা হয়ে থাকে সরকারের মাধ্যমে। এদের বেতন, ভাতা, উৎসব বোনাস, পেনশন সুবিধা ইত্যাদির মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রদান করা হয়ে থাকে। কিন্তু প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে ব্যক্তি মালিকানাধীন এর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনও অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হয়।

৪। কেউ যদি সরকারি প্রতিষ্ঠান হতে সঠিক সেবা না পেয়ে থাকে তাহলে তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করতে পারবেন। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গুলোর ক্ষেত্রেও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অথবা মালিকের কাছেও সেবার বিষয়ে মতামত জানাতে পারবেন।

আমাদের শেষ কথা

বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে অনেক বড় বড় প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। যার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের গার্মেন্টস, এনজিও, ম্যানুফ্যাকচারিং প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি অন্যতম। এরাও দেশের অর্থনীতিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। অসংখ্য লোক এই সকল প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করছে। একটি প্রতিষ্ঠান যতই ব্যক্তি মালিকানাধীন হোক না কেন তাকে অবশ্যই সরকারের কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। কারণ সকল প্রতিষ্ঠানেরই মূল লক্ষ্য হচ্ছে জনগণের কে সঠিক সেবা প্রদান করা। আশা করি আপনারা সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পার্থক্য কি সে সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা লাভ করতে পেরেছেন।

গাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ। বিস্তারিত জানতে এখানে প্রবেশ করুন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পার্থক্য কি

আপডেট সময় : ০৯:৫০:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়বস্তু হচ্ছে সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যেও পার্থক্য কি। অনেক সময় আমরা এটি নির্ধারণ করতে ভুল করে ফেলি। সাধারণত সরকার দ্বারা যে সকল প্রতিষ্ঠান গুলি পরিচালনা, কর্মচারীদের বেতন প্রদান ইত্যাদি কার্যকলাপ সম্পন্ন হয়ে থাকে সেগুলোই হচ্ছে সরকারি ইনস্টিটিউট বা প্রতিষ্ঠান।

আবার অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেগুলো ব্যক্তি মালিকানাধীন। সেগুলোর সকল কার্যক্রম প্রতিষ্ঠানটির মালিক পরিচালনা করে থাকে। এই ধরনের প্রতিষ্ঠানকে আমরা বলে থাকি বেসরকারি বা প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান। এটিই হচ্ছে মূল পার্থক্য। তবে এছাড়াও আনুষঙ্গিক অনেক বিষয়াদি আছে। চলুন সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পার্থক্য

আপনারা নিশ্চয়ই সরকারি হাসপাতালের কথা শুনেছেন। প্রতিটি জেলা শহরে একটি বৃহৎ সরকারি জেনারেল হাসপাতাল থেকে থাকে। আপনি যখন এই ধরনের প্রতিষ্ঠান থেকে সেবা গ্রহণ করতে যাবেন তখন খরচ অনেকাংশই কম হবে। কারণ এখানে সরকার ভর্তুকি বা অর্থ বরাদ্দ করে থাকে। ডাক্তার, নার্স ইত্যাদি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনও প্রদান করা হয় সরকারি পক্ষ থেকে। এমনকি হাসপাতালে নানা ধরনের সুবিধা, বড় বড় বিল্ডিং তৈরি, সরঞ্জাম ইত্যাদিও বাজেটের মাধ্যমে প্রদান করা হয়ে থাকে।

কিন্তু আপনি যখন একটি প্রাইভেট হসপিটালে যাবেন তখন অর্থ খরচ অনেকটাই বেড়ে যাবে। কারণ এই প্রাইভেট হসপিটাল হচ্ছে ব্যক্তি মালিকানাধীন। এখানে একজন ব্যক্তি সরকারের অনুমতি এবং যথাযথ শর্ত পূরণ করে হসপিটাল প্রতিষ্ঠা করে। তারপর যাবতীয় খরচ সেই ব্যক্তি বহন করে। আর হসপিটালে থেকে সেবা প্রদান করে যে অর্থ উপার্জন হয় তা মালিক নিজে ভোগ করতে পারে। অবশ্য সেই ইনকাম থেকে সরকারকে যথাযথ প্রদান করতে হয়।

আশা করি এবার আপনি সরকারী ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পেরেছেন।

বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের উদাহরণ হচ্ছে:

জনগণকে সেবা প্রধানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার অনেক প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের হাসপাতাল, স্কুল, কলেজ, আদালত, পাসপোর্ট অফিস, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইত্যাদি গভারমেন্ট প্রতিষ্ঠানের উদাহরণ।

বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উদাহরণ হচ্ছে: প্রাইভেট হসপিটাল, প্রাইভেট স্কুল, পোশাক কারখানা, শপিং মল, বিনোদন কেন্দ্র ইত্যাদি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান। অর্থাৎ যে সকল ইনস্টিটিউট গুলো এক বা একাধিক ব্যক্তির অধীনে গড়ে উঠেছে সেগুলোই প্রাইভেট বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।

সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যেও তুলনামূলক আলোচনা

১। আপনি যেকোনো ধরনের গভারমেন্ট প্রতিষ্ঠান থেকে সেবা গ্রহণ করতে পারবেন খুবই কম খরচে। যেমন সরকারি স্কুল গুলোতে লেখাপড়ার খরচ একদমই কম। কিন্তু প্রাইভেট স্কুল কলেজ গুলোতে অনেক খরচ বহন করতে হয়।

২। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সেবার মান বেশ ভালো হয়ে থাকে। কারণ তাদের লক্ষ্য হচ্ছে জনগণকে সেবা প্রদান করে যথেষ্ট মুনাফা অর্জন করা। অবশ্য বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান গুলোতে উন্নত সেবা পাওয়া যায়।

৩। বিভিন্ন গভর্নমেন্ট ইনস্টিটিউটে নিয়োগ করা হয়ে থাকে সরকারের মাধ্যমে। এদের বেতন, ভাতা, উৎসব বোনাস, পেনশন সুবিধা ইত্যাদির মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রদান করা হয়ে থাকে। কিন্তু প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে ব্যক্তি মালিকানাধীন এর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনও অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হয়।

৪। কেউ যদি সরকারি প্রতিষ্ঠান হতে সঠিক সেবা না পেয়ে থাকে তাহলে তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করতে পারবেন। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গুলোর ক্ষেত্রেও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অথবা মালিকের কাছেও সেবার বিষয়ে মতামত জানাতে পারবেন।

আমাদের শেষ কথা

বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে অনেক বড় বড় প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। যার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের গার্মেন্টস, এনজিও, ম্যানুফ্যাকচারিং প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি অন্যতম। এরাও দেশের অর্থনীতিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। অসংখ্য লোক এই সকল প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করছে। একটি প্রতিষ্ঠান যতই ব্যক্তি মালিকানাধীন হোক না কেন তাকে অবশ্যই সরকারের কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। কারণ সকল প্রতিষ্ঠানেরই মূল লক্ষ্য হচ্ছে জনগণের কে সঠিক সেবা প্রদান করা। আশা করি আপনারা সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পার্থক্য কি সে সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা লাভ করতে পেরেছেন।

গাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ। বিস্তারিত জানতে এখানে প্রবেশ করুন।