ঢাকা ১০:১৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কম খরচে ঘরোয়া উপায়ে ওজন কমানোর পদ্ধতি গুলো জেনে নিন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:৫৪:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ২৫ বার পড়া হয়েছে

ওজন কমানোর উপায়

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন ঘরোয়া উপায়ে ওজন কমানোর পদ্ধতি গুলো সম্পর্কে। কথায় আছে স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। যদি দেহ সুস্থ থাকে তাহলে মনও ভালো থাকে এবং পরিশ্রমও অনেক বেশি করা যায়। কিন্তু অনিয়মিত জীবন যাপনের ফলে আমরা নিজেরাই ডেকে আনি নানা রকমের স্বাস্থ্য সমস্যা। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অতিরিক্ত ওজন।

অনেকেই তো রীতিমতো লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করেন শুধুমাত্র কিছুটা ওজন কমানো জন্য। কিন্তু কোনভাবেই মন মত হচ্ছে না নিজের শরীর। আবার নির্দিষ্ট কোন চাকরির জন্য প্রয়োজন হয় উচ্চতা অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণের ওয়েটের। অনেক সরকারি এবং বেসরকারি চাকরি রয়েছে যেগুলোতে শারীরিক দক্ষতা এবং ফিটনেস খুবই জরুরী। চলুন এমন কিছু ঘরোয়া উপায় জেনে নেই যেগুলো অবলম্বন করে আপনি শরীরের ওজন বৃদ্ধি ঠেকাতে পারবেন।

প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করুন

নিজেকে পুরোপুরি সুস্থ রেখে শুধুমাত্র খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করেই প্রতি মাসে ৪ থেকে ৫ কেজি ওজন সহজেই কমাতে পারবেন। তবে আপনার যদি আরও জরুরী ভিক্তিতে অনেক বেশি ওয়েট লস করার প্রয়োজন পড়ে তাহলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।

শুধুমাত্র খাবারের অভ্যাস পরিবর্তন করে নয় বরং দৈনন্দিন জীবনেও আনতে হবে কিছু পরিবর্তন। সে সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

ওজন কমানোর উপায় হিসেবে সুষম খাবার গ্রহণ

আপনি শুধুমাত্র মাছ, মাংস খেতে পছন্দ করেন সবজি একদমই খান না এরকমটা কখনোই করা চলবে না। খাবারের পাতে নিয়মিত সমান হারে মাছ-মাংস, সবজি ইত্যাদি রাখতে হবে।

সেই সাথে খেতে হবে নানারকম মৌসুমী ফলমূল। ওজন হ্রাস করতে শাকসবজি এবং ফলমূলই সব চাইতে কার্যকরী উপায়। যাদের বিকেলবেলা কিংবা সন্ধ্যাবেলা খাওয়ার অভ্যাস আছে তারা ভারী খাবার না খেয়ে পপকর্ন, সালাত, ফলের জুস ইত্যাদি খেতে পারেন। এতে করে ক্ষুধা নিবারণ হবে এবং ওজনও নিয়ন্ত্রিত থাকবে।

নিজেকে মানসিক চিন্তামুক্ত রাখুন

অতিরিক্ত মানসিক টেনশন আমাদের হরমোনের উপর বিরূপ প্রভাব বিস্তার করে। যার কারণে বৃদ্ধি পেতে পারে ওজন এবং দেখা দিতে পারে স্বাস্থ্যের ভারসাম্যহীনতা। তাই যথাসম্ভব চিন্তা মুক্ত রাখুন নিজেকে। যেটি কখনো হবার নয় সেটি নিয়ে ওভার থিংকিং করবেন না।

প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম

একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের দৈনন্দিন কমপক্ষে ৮ থেকে ৯ ঘন্টা ঘুমানো উচিত। যদি সারাদিন কঠোর পরিশ্রম করেন তাহলে মাঝে মাঝে কিছু সময় করে বিশ্রাম নিন।

কারণ শুধুমাত্র রাতের বেলা অল্প একটু ঘুম অনেক সময় ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে। আর চেষ্টা করুন সারারাত জেগে না থেকে ঘুমিয়ে সকাল সকাল উঠার। বেলা করে ঘুমানো ওজন বাড়ানোর জন্য দায়ী।

নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করুন

স্বাস্থ্যগত উন্নতির জন্য শারীরিক ব্যায়ামের বিকল্প কোনো কিছু নেই। চেষ্টা করুন প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা জিমে কাটানোর জন্য। এর পাশাপাশি বিকেলবেলা এবং সকালবেলা হাঁটতে পারেন, সাঁতার কাটতে পারেন, ফুটবল, বাস্কেটবল, ক্রিকেট ইত্যাদি খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করতে পারেন।

এ ধরনের খেলাধুলা গুলি একদিকে যেমন আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং অপরদিকে মানসিক উন্নতি সাধন করে।

রাতের খাবার তাড়াতাড়ি খান

সারাদিন কাজকর্ম করে রাতের বেলা খেয়ে দেয়ে তখনই আমরা ঘুমিয়ে পড়ি। এ ধরনের অভ্যাস আমাদের অনেকের মাঝেই আছে। কিন্তু খাওয়ার পরই শোয়ার অভ্যাসটি আমাদের ওজন কমানোর উপায়ে বড় একটি বাধা। তাই তাড়াতাড়ি খেয়ে নিন এবং ঘুমানোর আগে সামান্য পরিমাণে হাঁটাচলা করুন। এতে করে পরিপাকক্রিয়া ভালো থাকবে এবং আপনিও হতে পারবেন পাতলা।

খাওয়ার আগে ও পরে পানি খাওয়ার নিয়ম

আপনি যখন খেতে বসবেন তার কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ মিনিট আগে কিছু পরিমাণে পানি খান। এতে করে আপনার হজম প্রক্রিয়া ভালো হবে। আবার খাওয়া শেষ করার পর সাথে সাথেই পানি খাবেন না বরং ৫ থেকে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন।

সকল ধরনের ভাজাপোড়া খাবার পরিহার করুন

বাইরের অতিরিক্ত তৈলাক্ত জাঙ্ক ফুড, ভাজাপোড়া ইত্যাদি খাবার ফলে আমাদের শরীরে চর্বি জমে যায়। এছাড়াও পেটের সমস্যা, আলসারের সমস্যা ইত্যাদি সহ শারীরিক অসুবিধা দিনদিন বেড়েই চলে। তাই এ ধরনের জাঙ্ক ফুড গুলি একেবারে পরিহার করা প্রয়োজন। যদি ক্ষুধা লেগে থাকে তাহলে কোন ফল কিংবা সবজি খাওয়ার চেষ্টা করুন।

ওজন কমানোর উপায় হিসেবে চিনি জাতীয় খাবার পরিহার

আপনি কি জানেন ১ চামচ চিনিতে ক্যালোরি থাকে প্রায় ১৬ শতাংশ। যেটি আপনার ওজন দ্রুত সময়ে সহজে বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই সকল ধরনের চিনি জাতীয় খাবার চা ইত্যাদি কমিয়ে দিন।

গ্রিন টি খেয়ে কি ওজন কমানো যায়

অত্যন্ত জনপ্রিয় গ্রিন টি তে এমন কিছু উপাদান আছে যেগুলো আমাদের দেহে প্রবেশ করে ওজন কমাতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত এটি পান করতে পারেন। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অতিরিক্ত ভাবে গ্রিন টি পান করা কখনোই উচিত নয়।

গরম পানি

গরম পানির সাথে কিছু পরিমাণে লেবুর রস মিশিয়ে পান করার উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানেন। লেবু ছাড়া ও নিয়মিত হালকা গরম পানি এর মাধ্যমে পান করার মাধ্যমে ওজন কমানো যায়। এছাড়াও কুসুম কুসুম গরম পানি আমাদের দেহ থেকে বিভিন্ন টক্সিন দূর করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। সেই সাথে কমে যায় মেদ।

মৌসুমী ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন

বিশেষ করে শহর এলাকার লোকজন বিভিন্ন ধরনের জাঙ্ক ফুড খেতে বেশি পছন্দ করে। এখনকার আধুনিক ছেলে-মেয়েদের মধ্যেও এই ধরনের খাবার খাবার প্রবণতা বেশি দেখা যায়।

তাইতো অতিরিক্ত ওজন সমস্যায় ভুগতে থাকা মানুষের পরিমাণও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর অন্যতম একটি প্রতিকার হচ্ছে মৌসুমী ফল খাওয়া। আমাদের দেশে সারা বছরই কোনো না কোনো ফল বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায় আপনি যদি এই অভ্যাস গড়ে তোলেন তাহলে শারীরিকভাবে যেমনটা শক্তিশালী হবেন ঠিক তেমনিভাবে গঠনও অনেক সুন্দর হবে।

প্রতিবেলা খাওয়ার পর হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন

সকাল, দুপুর, বিকাল কিংবা রাত যখনই খাবার শেষ হবে তখনই কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ মিনিট হাটুন। এতে করে কখনোই আপনার পেটে চর্বি জমবে না। অত্যন্ত সহজ এবং কার্যকরী এই পদ্ধতিটি অবলম্বন করে সারা বছর ফিট থাকতে পারবেন।

ওজন কমানোর উপায় গুলির ব্যাপারে কিছু সতর্কতা

• বিশেষজ্ঞ ডাক্তার কিংবা ডায়েটেশিয়ানের পরামর্শ ছাড়া যত্রতত্র ডায়েট প্ল্যান অনুসরণ করবেন না। এতে করে শারীরিক অসুস্থতায় পড়তে পারেন।

• অনলাইনে চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দেখে বিভিন্ন ধরনের চা, কফি কিংবা মেডিসিন গ্রহণ করবেন না। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এগুলো ভুয়া এবং নকল হয়ে থাকে।

• সকালবেলা না খেয়ে থাকলে ওজন কমে এই ধারণা আমাদের মোটামুটি সবার মধ্যে রয়েছে। কিন্তু চিকিৎসকদের মধ্যে এটি সম্পূর্ণ ভুল। বরং নিয়মিত সকাল বেলা না খেয়ে থাকার কারণে আলসারসহ নানা ধরনের অসুখ-বিসুখ দেখা দিতে পারে। তাইতো ঘুম থেকে উঠে ভর পেট খেয়ে আপনি দুপুর কিংবা রাতে খাওয়ার পরিমাণ কিছুটা কমিয়ে দিতে পারেন।

• অনেকেই ওজন কমাতে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া একদম ছেড়ে দেন। যার কারণে অল্প কিছুদিন পরেই দেখা যেতে পারে পুষ্টিহীনতা। সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণে ক্যালরি, প্রোটিন, ভিটামিন আপনার শরীরকে প্রদান করতেই হবে।

আমাদের শেষ কথা

একটি সুস্থ দেহ গঠন করা খুব কঠিন কোন কাজ নয়। নিয়মিত জীবন যাপনের কিছু কিছু পরিবর্তনের ফলেই এটি অর্জন করা যায়। তবে যারা কিনা কোন রকস বিধি নিষিধের তোয়াক্তা করেন না তাদের ক্ষেত্রেই বাধে যত বিপত্তি। কারণ সব কিছুরই নিয়মিত পরিচর্যা প্রয়োজন। আপনি সারা বছরের কাজ একদিনে কখনো সম্পন্ন করতে পারবেন না। ঠিক সেভাবেই সারা বছর যত্রতত্র খাওয়া-দাওয়া করে একদিন কিংবা এক সপ্তাহে ওজন কমানোর উপায় খুঁজে পাবেন না। এর জন্য আপনাকে অবশ্যই বছরের প্রতিটি দিন সচেতন ভাবে পার করতে হবে।

তাহলে শেষ বয়সে গিয়েও আপনি তরুণদের মত উদ্যম থাকবেন এবং সকল ধরনের কাজ নিজেই করতে পারবেন।

ঘরে বসে অনলাইনে লোন পাওয়ার উপায় কি? জানতে এখানে প্রবেশ করুন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

কম খরচে ঘরোয়া উপায়ে ওজন কমানোর পদ্ধতি গুলো জেনে নিন

আপডেট সময় : ০৩:৫৪:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪

আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন ঘরোয়া উপায়ে ওজন কমানোর পদ্ধতি গুলো সম্পর্কে। কথায় আছে স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। যদি দেহ সুস্থ থাকে তাহলে মনও ভালো থাকে এবং পরিশ্রমও অনেক বেশি করা যায়। কিন্তু অনিয়মিত জীবন যাপনের ফলে আমরা নিজেরাই ডেকে আনি নানা রকমের স্বাস্থ্য সমস্যা। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অতিরিক্ত ওজন।

অনেকেই তো রীতিমতো লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করেন শুধুমাত্র কিছুটা ওজন কমানো জন্য। কিন্তু কোনভাবেই মন মত হচ্ছে না নিজের শরীর। আবার নির্দিষ্ট কোন চাকরির জন্য প্রয়োজন হয় উচ্চতা অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণের ওয়েটের। অনেক সরকারি এবং বেসরকারি চাকরি রয়েছে যেগুলোতে শারীরিক দক্ষতা এবং ফিটনেস খুবই জরুরী। চলুন এমন কিছু ঘরোয়া উপায় জেনে নেই যেগুলো অবলম্বন করে আপনি শরীরের ওজন বৃদ্ধি ঠেকাতে পারবেন।

প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করুন

নিজেকে পুরোপুরি সুস্থ রেখে শুধুমাত্র খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করেই প্রতি মাসে ৪ থেকে ৫ কেজি ওজন সহজেই কমাতে পারবেন। তবে আপনার যদি আরও জরুরী ভিক্তিতে অনেক বেশি ওয়েট লস করার প্রয়োজন পড়ে তাহলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।

শুধুমাত্র খাবারের অভ্যাস পরিবর্তন করে নয় বরং দৈনন্দিন জীবনেও আনতে হবে কিছু পরিবর্তন। সে সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

ওজন কমানোর উপায় হিসেবে সুষম খাবার গ্রহণ

আপনি শুধুমাত্র মাছ, মাংস খেতে পছন্দ করেন সবজি একদমই খান না এরকমটা কখনোই করা চলবে না। খাবারের পাতে নিয়মিত সমান হারে মাছ-মাংস, সবজি ইত্যাদি রাখতে হবে।

সেই সাথে খেতে হবে নানারকম মৌসুমী ফলমূল। ওজন হ্রাস করতে শাকসবজি এবং ফলমূলই সব চাইতে কার্যকরী উপায়। যাদের বিকেলবেলা কিংবা সন্ধ্যাবেলা খাওয়ার অভ্যাস আছে তারা ভারী খাবার না খেয়ে পপকর্ন, সালাত, ফলের জুস ইত্যাদি খেতে পারেন। এতে করে ক্ষুধা নিবারণ হবে এবং ওজনও নিয়ন্ত্রিত থাকবে।

নিজেকে মানসিক চিন্তামুক্ত রাখুন

অতিরিক্ত মানসিক টেনশন আমাদের হরমোনের উপর বিরূপ প্রভাব বিস্তার করে। যার কারণে বৃদ্ধি পেতে পারে ওজন এবং দেখা দিতে পারে স্বাস্থ্যের ভারসাম্যহীনতা। তাই যথাসম্ভব চিন্তা মুক্ত রাখুন নিজেকে। যেটি কখনো হবার নয় সেটি নিয়ে ওভার থিংকিং করবেন না।

প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম

একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের দৈনন্দিন কমপক্ষে ৮ থেকে ৯ ঘন্টা ঘুমানো উচিত। যদি সারাদিন কঠোর পরিশ্রম করেন তাহলে মাঝে মাঝে কিছু সময় করে বিশ্রাম নিন।

কারণ শুধুমাত্র রাতের বেলা অল্প একটু ঘুম অনেক সময় ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে। আর চেষ্টা করুন সারারাত জেগে না থেকে ঘুমিয়ে সকাল সকাল উঠার। বেলা করে ঘুমানো ওজন বাড়ানোর জন্য দায়ী।

নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করুন

স্বাস্থ্যগত উন্নতির জন্য শারীরিক ব্যায়ামের বিকল্প কোনো কিছু নেই। চেষ্টা করুন প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা জিমে কাটানোর জন্য। এর পাশাপাশি বিকেলবেলা এবং সকালবেলা হাঁটতে পারেন, সাঁতার কাটতে পারেন, ফুটবল, বাস্কেটবল, ক্রিকেট ইত্যাদি খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করতে পারেন।

এ ধরনের খেলাধুলা গুলি একদিকে যেমন আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং অপরদিকে মানসিক উন্নতি সাধন করে।

রাতের খাবার তাড়াতাড়ি খান

সারাদিন কাজকর্ম করে রাতের বেলা খেয়ে দেয়ে তখনই আমরা ঘুমিয়ে পড়ি। এ ধরনের অভ্যাস আমাদের অনেকের মাঝেই আছে। কিন্তু খাওয়ার পরই শোয়ার অভ্যাসটি আমাদের ওজন কমানোর উপায়ে বড় একটি বাধা। তাই তাড়াতাড়ি খেয়ে নিন এবং ঘুমানোর আগে সামান্য পরিমাণে হাঁটাচলা করুন। এতে করে পরিপাকক্রিয়া ভালো থাকবে এবং আপনিও হতে পারবেন পাতলা।

খাওয়ার আগে ও পরে পানি খাওয়ার নিয়ম

আপনি যখন খেতে বসবেন তার কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ মিনিট আগে কিছু পরিমাণে পানি খান। এতে করে আপনার হজম প্রক্রিয়া ভালো হবে। আবার খাওয়া শেষ করার পর সাথে সাথেই পানি খাবেন না বরং ৫ থেকে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন।

সকল ধরনের ভাজাপোড়া খাবার পরিহার করুন

বাইরের অতিরিক্ত তৈলাক্ত জাঙ্ক ফুড, ভাজাপোড়া ইত্যাদি খাবার ফলে আমাদের শরীরে চর্বি জমে যায়। এছাড়াও পেটের সমস্যা, আলসারের সমস্যা ইত্যাদি সহ শারীরিক অসুবিধা দিনদিন বেড়েই চলে। তাই এ ধরনের জাঙ্ক ফুড গুলি একেবারে পরিহার করা প্রয়োজন। যদি ক্ষুধা লেগে থাকে তাহলে কোন ফল কিংবা সবজি খাওয়ার চেষ্টা করুন।

ওজন কমানোর উপায় হিসেবে চিনি জাতীয় খাবার পরিহার

আপনি কি জানেন ১ চামচ চিনিতে ক্যালোরি থাকে প্রায় ১৬ শতাংশ। যেটি আপনার ওজন দ্রুত সময়ে সহজে বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই সকল ধরনের চিনি জাতীয় খাবার চা ইত্যাদি কমিয়ে দিন।

গ্রিন টি খেয়ে কি ওজন কমানো যায়

অত্যন্ত জনপ্রিয় গ্রিন টি তে এমন কিছু উপাদান আছে যেগুলো আমাদের দেহে প্রবেশ করে ওজন কমাতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত এটি পান করতে পারেন। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অতিরিক্ত ভাবে গ্রিন টি পান করা কখনোই উচিত নয়।

গরম পানি

গরম পানির সাথে কিছু পরিমাণে লেবুর রস মিশিয়ে পান করার উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানেন। লেবু ছাড়া ও নিয়মিত হালকা গরম পানি এর মাধ্যমে পান করার মাধ্যমে ওজন কমানো যায়। এছাড়াও কুসুম কুসুম গরম পানি আমাদের দেহ থেকে বিভিন্ন টক্সিন দূর করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। সেই সাথে কমে যায় মেদ।

মৌসুমী ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন

বিশেষ করে শহর এলাকার লোকজন বিভিন্ন ধরনের জাঙ্ক ফুড খেতে বেশি পছন্দ করে। এখনকার আধুনিক ছেলে-মেয়েদের মধ্যেও এই ধরনের খাবার খাবার প্রবণতা বেশি দেখা যায়।

তাইতো অতিরিক্ত ওজন সমস্যায় ভুগতে থাকা মানুষের পরিমাণও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর অন্যতম একটি প্রতিকার হচ্ছে মৌসুমী ফল খাওয়া। আমাদের দেশে সারা বছরই কোনো না কোনো ফল বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায় আপনি যদি এই অভ্যাস গড়ে তোলেন তাহলে শারীরিকভাবে যেমনটা শক্তিশালী হবেন ঠিক তেমনিভাবে গঠনও অনেক সুন্দর হবে।

প্রতিবেলা খাওয়ার পর হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন

সকাল, দুপুর, বিকাল কিংবা রাত যখনই খাবার শেষ হবে তখনই কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ মিনিট হাটুন। এতে করে কখনোই আপনার পেটে চর্বি জমবে না। অত্যন্ত সহজ এবং কার্যকরী এই পদ্ধতিটি অবলম্বন করে সারা বছর ফিট থাকতে পারবেন।

ওজন কমানোর উপায় গুলির ব্যাপারে কিছু সতর্কতা

• বিশেষজ্ঞ ডাক্তার কিংবা ডায়েটেশিয়ানের পরামর্শ ছাড়া যত্রতত্র ডায়েট প্ল্যান অনুসরণ করবেন না। এতে করে শারীরিক অসুস্থতায় পড়তে পারেন।

• অনলাইনে চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দেখে বিভিন্ন ধরনের চা, কফি কিংবা মেডিসিন গ্রহণ করবেন না। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এগুলো ভুয়া এবং নকল হয়ে থাকে।

• সকালবেলা না খেয়ে থাকলে ওজন কমে এই ধারণা আমাদের মোটামুটি সবার মধ্যে রয়েছে। কিন্তু চিকিৎসকদের মধ্যে এটি সম্পূর্ণ ভুল। বরং নিয়মিত সকাল বেলা না খেয়ে থাকার কারণে আলসারসহ নানা ধরনের অসুখ-বিসুখ দেখা দিতে পারে। তাইতো ঘুম থেকে উঠে ভর পেট খেয়ে আপনি দুপুর কিংবা রাতে খাওয়ার পরিমাণ কিছুটা কমিয়ে দিতে পারেন।

• অনেকেই ওজন কমাতে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া একদম ছেড়ে দেন। যার কারণে অল্প কিছুদিন পরেই দেখা যেতে পারে পুষ্টিহীনতা। সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণে ক্যালরি, প্রোটিন, ভিটামিন আপনার শরীরকে প্রদান করতেই হবে।

আমাদের শেষ কথা

একটি সুস্থ দেহ গঠন করা খুব কঠিন কোন কাজ নয়। নিয়মিত জীবন যাপনের কিছু কিছু পরিবর্তনের ফলেই এটি অর্জন করা যায়। তবে যারা কিনা কোন রকস বিধি নিষিধের তোয়াক্তা করেন না তাদের ক্ষেত্রেই বাধে যত বিপত্তি। কারণ সব কিছুরই নিয়মিত পরিচর্যা প্রয়োজন। আপনি সারা বছরের কাজ একদিনে কখনো সম্পন্ন করতে পারবেন না। ঠিক সেভাবেই সারা বছর যত্রতত্র খাওয়া-দাওয়া করে একদিন কিংবা এক সপ্তাহে ওজন কমানোর উপায় খুঁজে পাবেন না। এর জন্য আপনাকে অবশ্যই বছরের প্রতিটি দিন সচেতন ভাবে পার করতে হবে।

তাহলে শেষ বয়সে গিয়েও আপনি তরুণদের মত উদ্যম থাকবেন এবং সকল ধরনের কাজ নিজেই করতে পারবেন।

ঘরে বসে অনলাইনে লোন পাওয়ার উপায় কি? জানতে এখানে প্রবেশ করুন।