সুন্নত পদ্ধতিতে কিভাবে পানি পান করবেন
- আপডেট সময় : ১১:৫০:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ৪৩ বার পড়া হয়েছে
মুসলমানদের জন্য দৈনিদের জীবনের প্রতিটি কাজেই রয়েছে ইসলামের প্রদত্ত রীতি নীতি। সকল নিয়মকানুন মানা আমাদের জন্য আবশ্যক কর্তব্য এবং তা সবই হবে ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। সঠিক উপায়ে এবং মহান আল্লাহ তায়ালার নির্দেশিত পথ এবং রাসুল (সা.) এর সুন্নত অনুযায়ী জীবন যাপন করলে তাতে থাকে বরকত ও রহমত। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমি আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করব পানি পান করার সুন্নত নিয়ম। তাই এ বিষয়ে জানার জন্য পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আল্লাহতালা পৃথিবীর মানুষ ও জীবদের জন্য আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষণ করেন। আমরা চাইলেই এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। পৃথিবীর অনেক দেশে যখন খরায় এবং পিপাসায় মানুষ আর্তনাদ করছে তখন অপর প্রান্তে বন্যায় আশেপাশের সব কিছু টই টম্বুর হয়ে আছে। এসবের উপর আমরা কখনোই আধিপত্য বিস্তার করতে পারবোনা। মহান আল্লাহতালাই আমাদেরকে রহমতস্বরূপ বৃষ্টি এবং পানি দান করেছেন। তাই এর কৃতজ্ঞতা এবং শুকরিয়া আদায় করা উচিত।
পানি পান করার সুন্নত পদ্ধতি
আমি আগেই একবার বলেছি মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে রয়েছে ইসলামিক নিয়ম। পানি পান করার ক্ষেত্রেও রয়েছে বিশেষ নির্দেশনা এবং সেগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চলুন এ ব্যাপারে জানা নেই।
• পানি পান করার শুরুতে অবশ্যই বিসমিল্লাহ পড়তে হবে এবং শেষে আলহামদুলিল্লাহ পড়তে হবে। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস না ২/১০)
• অবশ্যই পানির পাত্র ডান হাতে ধরতে হবে এবং ডানহাতেই পানি পান করতে হবে। কেননা শয়তান সবসময় বাম হাতে পানি এবং অন্যান্য খাবার খায়। (সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ২/১৭২)
• ইসলামে দাঁড়িয়ে পানি পান করা নিষেধ করা হয়েছে এবং অবশ্যই বসে পান করতে হবে। (সহিহ মুসলিম, ২/১৭৩ নং হাদিস এটি উল্লেখ করা হয়েছে)
• তিন নিঃশ্বাসে পানি পান করা সুন্নত পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে নিঃশ্বাস ছাড়ার সময় গ্লাস থেকে মুখ আলাদা করতে হবে। (এই হাদিসটি উল্লেখিত রয়েছে সহীহ মুসলিমের ২/১৭৪ নং হাদিসে)
• যদি পানি পান করার পাত্রটি কিংবা গ্লাসটি ভাঙ্গা থাকে তাহলে সেই অংশে পান না করা। (সুনানে আবু দাউদ এর ২/১৬৭ নম্বর হাদীসে এটি উল্লেখ করা আছে)
• পানি সংরক্ষণ করার বড় পাত্রে মুখ লাগিয়ে না খাওয়া। এতে করে অতিরিক্ত বেশি পানি মুখে প্রবেশ করতে পারে এবং পোকামাকড়, বিচ্ছু ইত্যাদি থাকার আশঙ্কা রয়েছে। (বুখারী হাদিস শরীফের ২/১৪১ নং হাদিসে এটি উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়াও আপনি যদি কখনো পাশের জনকে পানি পরিবেশন করেন তাহলে অবশ্যই ডান পাশের জনকে আগে দিবেন। তিনিও তার ডান পাশের জনকে প্রদান করবেন। এমনটাই দিকনির্দেশনা দেওয়া আছে বিভিন্ন হাদিসে। আর আপনি যদি অজু করার পর পানি খেতে চান তাহলে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে পান করলে এতে করে বিভিন্ন ধরনের অসুখ-বিসুখ হতে আরোগ্য লাভ করা যায়।
আপনারা নিশ্চয়ই পানি পান করার সুন্নত নিয়মের সম্পর্কে ধারনা করতে পেরেছে। উপরেরটা প্রতিটি নিয়মই হাদিসে উল্লেখিত রয়েছে।। আমি চেষ্টা করেছি সেগুলোর রেফারেন্সসহ উপস্থাপন করা।
শেষ কথা
বিভিন্ন বিজ্ঞানের গবেষণায় এটি প্রমাণিত হয়েছে দাঁড়িয়ে পানি পান করা কখনই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। এটি হৃদপিণ্ড এবং শারীরিক ক্ষতির জন্য দায়ী। আর ইসলামে বসে পান করার ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।। তবে অজু করার পরে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে পানি খাওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিন্ন। আল্লাহতালা চাইলে যে কোন কিছুই সম্ভব করতে পারেন। তিনি এই পদ্ধতির মাধ্যমে আমাদেরকে বিভিন্ন অসুখ-বিসুখ হতে মুক্তি লাভের উপায় দেখিয়ে দিয়েছেন। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এই সকল সুন্নত অবশ্যই পালন করব।
সেই সাথে পাড়া প্রতিবেশী কিংবা বন্ধু বান্ধবের সাথেও এগুলো শেয়ার করব যাতে তারাও ইসলামিক জীবনধারা সম্পর্কে জানতে পারে।
আর আপনারা যারা শহরে বসবাস করেন তাদের পক্ষে বিশুদ্ধ পানি খুঁজে পাওয়া বেশ মুশকিলের ব্যাপার। বাজারে এখন ভালো মানের ফিল্টার পাওয়া যায় যেগুলো দিয়ে পানি পরিশোধন করতে পারেন। সুস্বাস্থ্য এবং জীবন রক্ষার জন্য পানি যেমন গুরুত্বপূর্ণ ঠিক তেমনি ভাবে অস্বাস্থ্যকর পানি আনতে পারে বিপদ। তাই স্বাস্থ্য সচেতন থাকুন এবং জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে ইসলামী বিধি নিষেধ মেনে চলুন।
একজন প্রার্থী ৩ বারের বেশি বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। খুঁটিনাটি জানতে এখানে প্রবেশ করুন।