আপনি কি জানেন আলু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কি
- আপডেট সময় : ০৯:০২:৩২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪ ৫৫ বার পড়া হয়েছে
বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রে জনপ্রিয় একটি সবজি আলু খাওয়ার উপকারিতা এবং এর কিছু ক্ষতিকারক দিক গুলো নিয়ে আজকে আলোচনা করব। পৃথিবীতে যত সবজি রয়েছে তার ভিতরে সবচাইতে বেশি খাওয়া হয় এটি। এমনকি সকল ধরনের তরকারি এবং আইটেমের সাথে খুবই মানানসই হয়। মাংস রান্না, সবজি রান্না, ভর্তা করা, চিপস বানানো, ফাস্টফুডের সাথে, ডাউল রান্না করা এমন কোন আইটেম নেই যেখানে আলুর ব্যবহার নেই।
আলুর পুষ্টি গুণ অনেক। এর ভেতরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও খনিজ ফাইবার। সেই সাথে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে শর্করা। চলুন এর ভালো মন্দ দিক গুলো আজকে জেনে নেই।
আলু খাওয়ার উপকারিতা
• আমরা জানি ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য অবশ্যই কোন সোডিয়াম যুক্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন। এই হিসেবে আলু সবজির খুবই উপকারী একটি উপাদান।
• আমি আগে একবার বলেছি আলুতে থাকা ফাইবার, পটাশিয়াম এবং ইত্যাদি উপাদান আমাদের হার্টকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
• বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন আলুর মাধ্যমে ক্যান্সার প্রতিরোধ করাও সম্ভব। কারণ এতে ফোলেট নামের একটি উপাদান রয়েছে যেটি আমাদের ডিএনএকে পুনরায় মেরামত করতে সাহায্য করে। এর কারণে ক্যান্সারের কোষ গুলো ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায়।
• আলু খাওয়ার উপকারিতা গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এটিতে থাকা ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি উপাদান আমাদের হাড়ের গঠনের সাহায্য করে। যার কারণে আমাদের শরীরের গঠন অত্যন্ত মজবুত হয়।
• আমাদের হজম ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও এই সবজির জুড়ি মেলা ভার। মাঝে মাঝে সবজি হিসেবে এটি খেলে আমাদের পাচনতন্ত্রের কার্যকারিতা সঠিকভাবে সম্পন্ন হতে পারে।
• আপনি কি জানেন কিডনির পাথর থেকেও মুক্তি পাওয়া যায় এই সবজির মাধ্যমে। এটা যেহেতু আমাদের পাচনতন্ত্রকে সঠিকভাবে কার্যকর করে তোলে তাই এর ফলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকিও কমে যায়।
• যাদের দাঁতের কিংবা মাড়িতে সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রেও এই সবজিটি খুবই প্রয়োজনীয়। এর জন্য আপনি এক টুকরো আলু দিয়ে প্রতিদিন দাঁত পরিষ্কার করবেন। ভিটামিন সি এর উপাদান আপনাকে মাড়ির নানা রকম সমস্যা থেকে মুক্তি দেবে।
• পেট ফাঁপা, আমাশয়, ডায়রিয়া, হজম সমস্যা ইত্যাদি ক্ষেত্রে একটি আলু সিদ্ধ করে খাবেন দেখবেন আপনার সমস্যা দূর হয়ে গিয়েছে।
• আমরা প্রায়ই বাজার থেকে ইলেকট্রোলাইট বিভিন্ন ড্রিংকস কিনে খাই। কিন্তু আলুতেই এই ধরনের উপাদান রয়েছে।
• চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য উন্নত করতে আলু কার্যকর ভূমিকা পালন করে। কারণ এতে থাকা কার্বোহাইড্রেট, পটাশিয়াম এবং গ্লুকোজ উপাদান মস্তিষ্কের জন্য খুবই জরুরী।
• যারা ওজন কমানোর জন্য নিয়মিত ডায়েট করেন তারা অনেক সময় খাদ্য তালিকা থেকে এই সবজিটি বাদ দেন। কিন্তু আপনি কি জানেন প্রতিদিন অল্প পরিমাণে এই সবজি খাওয়ার কারণে দ্রুত ওজন কমে। আলুতে রয়েছে অধিক পরিমাণে ফাইবার এবং অল্প পরিমাণও ফ্যাট।
• নারীদের ক্ষেত্রে আলু খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে। আমরা জানি নারীদের পিরিয়ড হওয়ার আগ মুহূর্তে মিষ্টি জাতীয় জিনিস খাওয়ার প্রবণতা খুবই বৃদ্ধি পায়। আপনি নিশ্চয়ই জানেন বিভিন্ন ধরনের আলোতে রয়েছে মিষ্টি পদার্থ এবং ফাইবার। যা মেয়েদের পিরিয়ডকালীন মেজাজের খিটখিটের সমস্যা থেকে মুক্তি প্রদান করে।
আলু খাওয়ার অপকারিতা গুলো কি কি
প্রতিটি জিনিসেরই ভালোর পাশাপাশি কিছু মন্দ দিক থাকে। আলুর ক্ষেত্রেও ঠিক এরকম কিছু বিষয় রয়েছে।
• আপনি যদি উচ্চ তাপমাত্রায় সবজিটি রান্না করেন তাহলে এ থেকে অ্যাক্রিলামাইড নামক এক ধরনের বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ হয়। এই কারণে মানুষের স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে।
• যেহেতু বেশিরভাগ সময় আমরা আলু দিয়ে ভাজাপোড়া আইটেম বেশি করে থাকি তাই চর্বির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
• আরো যদি প্রক্রিয়াজত করা হয় তাহলে তো চর্বি এবং ক্যালরির পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে স্বাস্থ্য ক্ষতি দেখা যেতে পারে। যেমন ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস এবং চিপস।
• আপনি যদি মাখন, মার্জারিন বা অন্য কোন চর্বিযুক্ত উপাদান দিয়ে এই ছবিটি রান্না করেন তাহলে হাই ব্লাড প্রেসার এবং ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি পারে।
• খোসা ছাড়িয়ে আলু সিদ্ধ করে খেলে সেটিতে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ পুষ্টি থাকে না। তাই সর্বোচ্চ উপকার পাওয়ার জন্য অবশ্যই খোসা সহ রান্না করুন।
• সিদ্ধ করা একটি আলুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৭৮। তাই যাদের সুগারের সমস্যা আছে তাদের এটি না খাওয়াই ভালো। তবে রান্না করার সময় আলুর সাথে অন্যান্য সবজি যুক্ত করলে সুগারের পরিমাণ অনেকটাই কমে যায়।
• যদি আলুর বিভিন্ন জায়গায় সবুজ রংয়ের চিহ্ন পাওয়া যায় তাহলে সেটি না খাওয়াই ভালো। এক্ষেত্রে রান্না করলেও এই ধরনের টক্সিন দূর হয় না।
আলু খাওয়ার অপকারিতা গুলো সম্পর্কিত জানলেন। এবারে চলুন এর সম্পর্কে আরো কিছু তথ্য জেনে নেই।
১। ভাতের চাইতে আলুতে সবচাইতে বেশি কার্বোহাইড্রেট থাকে। আবার আলুর চেয়ে ভাতে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি থাকে।
২। খোসা সহ একটি আলুতে যে পরিমাণ ফাইবার থাকে একটি রুটি কিংবা পাস্তাতেও সেই পরিমাণ থাকে না।
উপরে আলুর খাওয়ার অপকারিতা এবং উপকারিতা করে নিশ্চয়ই অন্তত এটি বুঝতে পেরেছেন যে সুবিধা গুলোই বেশি। যদিও কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে তবে সঠিক উপায়ে রান্না এবং নিয়ম মেনে খেলে মন্দ দিক গুলো থাকেনা। নিত্য জীবনের আরো প্রয়োজনীয় টিপস পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের অন্যান্য কন্টেন্ট গুলো ভিজিট করুন।
জিপি কাস্টমার কেয়ারে কথা বলবেন কিভাব? বিস্তারিত জানতে এখানে প্রবেশ করুন।