ঢাকা ০৪:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারতের সবচাইতে কম দামি গাড়ি টাটা ন্যানো বিক্রি হয়নি কেনো

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:২৫:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪ ৭ বার পড়া হয়েছে

সবচাইতে কম দামি গাড়ি টাটা ন্যানো

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সম্প্রতি চির বিদায় নিয়েছেন ভারতের বিখ্যাত শিল্পপতি রতন টাটা। তারই উৎপাদন করা সবচাইতে কম দামি গাড়ি টাটা ন্যানো বিক্রি হয়নি তেমন। যদিও পৃথিবীর সবচাইতে কম দামি গাড়ি হিসেবে এটি বেশ সাড়া ফেলেছিল। ইন্ডিয়ার বাজারে মাত্র ১ লক্ষ রুপিতেই পাওয়া যেতো চার চাকার এই ব্র্যান্ড নিউ গাড়িটি। এই বাজেটে কেউ কখনো গাড়ি কেনার কথা কল্পনাও করতে পারেনি।

মানুষের হাতে স্বল্পদামে এই ধরনের গাড়ি তুলে দেওয়ার মত সাহস করেছিলেন রতন টাটা। তার সেই সাহসকে বাস্তবে রূপ দিতে তৈরি করেছিলেন টাটা ন্যানো। দেখতে অনেকটাই ছোট খাটো। একজন স্বল্প আয়ের মানুষ যাতে তার পরিবারের জন্য একটি গাড়ি কিনতে পারে তার ব্যবস্থায় করেছিলেন দূরদর্শী সম্পন্ন রতন টাটা। তবে উৎপাদনের শুরু থেকেই এই গাড়িটির জড়িয়ে ছিল নানা রকম তর্ক বিতর্কে। রাজনৈতিক কারণে উৎপাদনের স্থানও পরিবর্তন করা হয়েছিল। তারপরেও খুব একটা সফল হতে পারেনি। ইদানিং রাস্তায় খুব একটা দেখা যায় না টাটা ন্যানো কে।

টাটা কোম্পানির সবচাইতে কম দামি গাড়ি ছিল এটি। যেটি রতন টাটা স্বপ্নের গাড়ি হিসেবে পরিচিত। বিগত এক দশক আগে সারা ইন্ডিয়া জুড়ে হইচই ফেলে দিয়েছিল এই চার চাকার গাড়িটি। এমনকি মার্কেটে এক লাখ গাড়ি নামেও পরিচিত লাভ করেছিল। টাটা কোম্পানির লক্ষ্য ছিল মূলত স্বল্প আয়ের মানুষদের জন্য সহায়ক একটি গাড়ি উপহার দেওয়া। কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রতন টাটা? চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

আজ থেকে প্রায় ২৪ বছর আগে ২০০০ সালের দিকে ব্যাংককে একটি কাজে গিয়েছিলেন ভারতীয় শিল্পপতি রতন টাটা। সেখানে গিয়ে স্থানীয় লোকদেরকে দেখেন একটি স্কুটারের সামনে ছোট বাচ্চা এবং পেছনে স্ত্রী বসে নিয়েছেন সেটি চালাচ্ছেন। এভাবে গাড়ি চালানোকে তিনি অনিরাপদ মনে করেন। যার কারণে ছোট একটি গাড়িতে পরিবারের সবার জন্য জায়গা হয়ে যায় সে প্রচেষ্টায় তৈরি করেন টাটা ন্যানো। দাবি করা হয়েছিল পৃথিবীর সবচাইতে কম দামি টাটা ন্যানোতে ৪ জন খুবই সুন্দর ভাবে বসতে পারবেন।

ভারতের সবচাইতে কম দামি গাড়ি টাটা ন্যানো বিক্রি হয়নি কেনো

এমনকি অন্যান্য গাড়ির তুলনায় খুবই সাশ্রয়ী জ্বালানিতে নিতে এটি চালানো যাবে।। যার কারণে এটার নাম দেয়া হয় ন্যানো যার বাংলা অর্থ হচ্ছে ছোট। কিন্তু কম দামে কিভাবে এটি উপাদান করা সম্ভব সেই নকশা এবং দাম নিয়েও সারা পৃথিবী জুড়ে বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়ে যায়। এর প্রতি মানুষের আগ্রহ দেখে ভারতের বাইরে বিভিন্ন দেশে এটি সরবরাহ করার পরিকল্পনা করে রতন টাটা।

তারপর শুরু করা হয় উৎপাদন করার কারখানা তৈরি করার জন্য জমির খোঁজ। প্রথমদিকে পশ্চিমবাংলার এটি তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু সেই সময় অনেকেই জমি যেতে অস্বীকার করে।

পরবর্তীতে গুজরাতে এটির কারখানা তৈরি হয়েছিল। ২০০৮ সাল থেকে যাত্রা শুরু করে এই প্রতিষ্ঠানটি। তারপর সর্বপ্রথম বিক্রির জন্য বাজারে আসে ২০০৯ সালে। দাম অত্যন্ত কম এবং আকর্ষণীয় ডিজাইনের জন্য বিশ্বব্যাপী মানুষের বেশ মনোযোগ কেড়েছিলো। প্রথম দিকে প্রি বুকিং এর হিড়িক পড়ে যায় মানুষের মধ্যে।

কিন্তু যেমনটা ভাবা হয়েছিল ঠিক তেমনটা আর ব্যবসা করতে পারেনি টাটা ন্যানো। বিক্রির জন্য বাজারে আসার পর আস্তে আস্তে হারাতে থাকে জনপ্রিয়তা এবং গাড়িটি নিয়ে বিভিন্ন রকমের অভিযোগে উঠতে থাকে। তাই ধীরে ধীরে ব্যবসায় মন্দা দেখা দেয়। সর্বশেষ ২০১৮ সালে এটি উৎপাদন করা হয়েছিল তারপর থেকে মোটামুটি বন্ধ রয়েছে। তবে ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩ লক্ষ ইউনিট বিক্রি করতে পেরেছিল টাটা ন্যানো।

বাণিজ্যিকভাবে সফল হতে না পারলেও পৃথিবীর সবচাইতে কম দামি গাড়ি টাটা ন্যানো মানুষের এবং ভারতের বুকে বেশ জায়গা করে নিয়েছে। এমনকি পরবর্তী হিসেবে নানা কথা শোনা গিয়েছে যে ভবিষ্যতে ইলেকট্রিক গাড়ি হিসেবে পুনরায় বাজারে আসতে পারে। তবে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এই ধরনের কোন তথ্য দেওয়া হয়নি।

পৃথিবীর সেরা ইউটিউব চ্যানেল গুলোর নাম জানতে এখানে প্রবেশ করুন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ভারতের সবচাইতে কম দামি গাড়ি টাটা ন্যানো বিক্রি হয়নি কেনো

আপডেট সময় : ১০:২৫:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪

সম্প্রতি চির বিদায় নিয়েছেন ভারতের বিখ্যাত শিল্পপতি রতন টাটা। তারই উৎপাদন করা সবচাইতে কম দামি গাড়ি টাটা ন্যানো বিক্রি হয়নি তেমন। যদিও পৃথিবীর সবচাইতে কম দামি গাড়ি হিসেবে এটি বেশ সাড়া ফেলেছিল। ইন্ডিয়ার বাজারে মাত্র ১ লক্ষ রুপিতেই পাওয়া যেতো চার চাকার এই ব্র্যান্ড নিউ গাড়িটি। এই বাজেটে কেউ কখনো গাড়ি কেনার কথা কল্পনাও করতে পারেনি।

মানুষের হাতে স্বল্পদামে এই ধরনের গাড়ি তুলে দেওয়ার মত সাহস করেছিলেন রতন টাটা। তার সেই সাহসকে বাস্তবে রূপ দিতে তৈরি করেছিলেন টাটা ন্যানো। দেখতে অনেকটাই ছোট খাটো। একজন স্বল্প আয়ের মানুষ যাতে তার পরিবারের জন্য একটি গাড়ি কিনতে পারে তার ব্যবস্থায় করেছিলেন দূরদর্শী সম্পন্ন রতন টাটা। তবে উৎপাদনের শুরু থেকেই এই গাড়িটির জড়িয়ে ছিল নানা রকম তর্ক বিতর্কে। রাজনৈতিক কারণে উৎপাদনের স্থানও পরিবর্তন করা হয়েছিল। তারপরেও খুব একটা সফল হতে পারেনি। ইদানিং রাস্তায় খুব একটা দেখা যায় না টাটা ন্যানো কে।

টাটা কোম্পানির সবচাইতে কম দামি গাড়ি ছিল এটি। যেটি রতন টাটা স্বপ্নের গাড়ি হিসেবে পরিচিত। বিগত এক দশক আগে সারা ইন্ডিয়া জুড়ে হইচই ফেলে দিয়েছিল এই চার চাকার গাড়িটি। এমনকি মার্কেটে এক লাখ গাড়ি নামেও পরিচিত লাভ করেছিল। টাটা কোম্পানির লক্ষ্য ছিল মূলত স্বল্প আয়ের মানুষদের জন্য সহায়ক একটি গাড়ি উপহার দেওয়া। কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রতন টাটা? চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

আজ থেকে প্রায় ২৪ বছর আগে ২০০০ সালের দিকে ব্যাংককে একটি কাজে গিয়েছিলেন ভারতীয় শিল্পপতি রতন টাটা। সেখানে গিয়ে স্থানীয় লোকদেরকে দেখেন একটি স্কুটারের সামনে ছোট বাচ্চা এবং পেছনে স্ত্রী বসে নিয়েছেন সেটি চালাচ্ছেন। এভাবে গাড়ি চালানোকে তিনি অনিরাপদ মনে করেন। যার কারণে ছোট একটি গাড়িতে পরিবারের সবার জন্য জায়গা হয়ে যায় সে প্রচেষ্টায় তৈরি করেন টাটা ন্যানো। দাবি করা হয়েছিল পৃথিবীর সবচাইতে কম দামি টাটা ন্যানোতে ৪ জন খুবই সুন্দর ভাবে বসতে পারবেন।

ভারতের সবচাইতে কম দামি গাড়ি টাটা ন্যানো বিক্রি হয়নি কেনো

এমনকি অন্যান্য গাড়ির তুলনায় খুবই সাশ্রয়ী জ্বালানিতে নিতে এটি চালানো যাবে।। যার কারণে এটার নাম দেয়া হয় ন্যানো যার বাংলা অর্থ হচ্ছে ছোট। কিন্তু কম দামে কিভাবে এটি উপাদান করা সম্ভব সেই নকশা এবং দাম নিয়েও সারা পৃথিবী জুড়ে বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়ে যায়। এর প্রতি মানুষের আগ্রহ দেখে ভারতের বাইরে বিভিন্ন দেশে এটি সরবরাহ করার পরিকল্পনা করে রতন টাটা।

তারপর শুরু করা হয় উৎপাদন করার কারখানা তৈরি করার জন্য জমির খোঁজ। প্রথমদিকে পশ্চিমবাংলার এটি তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু সেই সময় অনেকেই জমি যেতে অস্বীকার করে।

পরবর্তীতে গুজরাতে এটির কারখানা তৈরি হয়েছিল। ২০০৮ সাল থেকে যাত্রা শুরু করে এই প্রতিষ্ঠানটি। তারপর সর্বপ্রথম বিক্রির জন্য বাজারে আসে ২০০৯ সালে। দাম অত্যন্ত কম এবং আকর্ষণীয় ডিজাইনের জন্য বিশ্বব্যাপী মানুষের বেশ মনোযোগ কেড়েছিলো। প্রথম দিকে প্রি বুকিং এর হিড়িক পড়ে যায় মানুষের মধ্যে।

কিন্তু যেমনটা ভাবা হয়েছিল ঠিক তেমনটা আর ব্যবসা করতে পারেনি টাটা ন্যানো। বিক্রির জন্য বাজারে আসার পর আস্তে আস্তে হারাতে থাকে জনপ্রিয়তা এবং গাড়িটি নিয়ে বিভিন্ন রকমের অভিযোগে উঠতে থাকে। তাই ধীরে ধীরে ব্যবসায় মন্দা দেখা দেয়। সর্বশেষ ২০১৮ সালে এটি উৎপাদন করা হয়েছিল তারপর থেকে মোটামুটি বন্ধ রয়েছে। তবে ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩ লক্ষ ইউনিট বিক্রি করতে পেরেছিল টাটা ন্যানো।

বাণিজ্যিকভাবে সফল হতে না পারলেও পৃথিবীর সবচাইতে কম দামি গাড়ি টাটা ন্যানো মানুষের এবং ভারতের বুকে বেশ জায়গা করে নিয়েছে। এমনকি পরবর্তী হিসেবে নানা কথা শোনা গিয়েছে যে ভবিষ্যতে ইলেকট্রিক গাড়ি হিসেবে পুনরায় বাজারে আসতে পারে। তবে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এই ধরনের কোন তথ্য দেওয়া হয়নি।

পৃথিবীর সেরা ইউটিউব চ্যানেল গুলোর নাম জানতে এখানে প্রবেশ করুন।