নবম শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস ২০২৪ জানুন
- আপডেট সময় : ০৩:০৫:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১ বার পড়া হয়েছে
প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, অষ্টম শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস ২০২৪ সৃজনশীল পদ্ধতির আদলে চূড়ান্ত করা হয়েছে। সেই সাথে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাসও পরিমার্জিত করে মানবন্টন এবং মূল্যায়নের নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্য পুস্তক বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
এবারের অষ্টম শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাসে লিখত এবং জ্ঞাননির্ভর মূল্যায়নের গুরুত্ব ৭০ শতাংশ রেখে শিখন মূল্যায়নের গুরুত্ব ৩০ শতাংশ রাখা হয়েছে। এই তথ্যগুলি এনসিটিবি এর মাধ্যমে জানা গিয়েছে।
সেই সাথে অভিজ্ঞতা নির্ভর মাধ্যমিক পর্যায়ের নতুন শিক্ষাক্রমের বই থেকে পুরনো শিক্ষাক্রমে ফিরে যাওয়ার জন্য ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণীর সকল শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা আয়োজন চলছে। এবারের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ডিসেম্বর মাসে।
অষ্টম শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস ২০২৪
বিগত শিক্ষা বছর গুলোতে অষ্টম শ্রেণীতে শিক্ষার্থীরা বার্ষিক পরীক্ষা অর্থাৎ জেএসসি বা জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। কিন্তু বিগত বছরের এই জেএসসি পরীক্ষা বাতিল করা হয়। তারপর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠক্রমের ক্ষেত্রে পুরনো পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে ঘোষণা দিয়েছে।
অষ্টম শ্রেণীর জেএসসি পরীক্ষা পরিবর্তনের পাশাপাশি নবম এবং দশম শ্রেণীতে সাইন্স, আর্টস, কমার্স যে বিভাগের পদ্ধতি ছিল সেটিও পুনরায় ফেরত আনা হচ্ছে। অর্থাৎ বিগত সরকারের আমলে এই দুই শ্রেণীতে বিভাগ বন্টন বাতিল করা হয়েছিল। সে সাথে নবম শ্রেণীর সিলেবাস অনুযায়ী সম্পন্ন পরীক্ষা এবং পরবর্তী শ্রেণী অর্থাৎ দশম শ্রেণীতে নতুন সিলেবাস অনুযায়ী পড়তে হতো। যেই সিলেবাসের উপরে পরীক্ষা হতো একই বছরের ডিসেম্বর মাসে।
যদিও এই শিক্ষাক্রমটি পুরোপুরি ভাবে কার্যকর হয়নি এর ভেতরেই বাংলাদেশ সরকার পরিবর্তিত হয়েছে। তাই নতুন সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত পূর্বের পাঠক্রমে ফিরে যাওয়ার।
তাই অষ্টম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস অনুযায়ী পাঠক্রম সম্পন্ন করার প্রস্তুতি চলছে।
ইতি মধ্য চলতি বছরের শিক্ষাবর্ষের নয় মাস শেষ হয়ে গিয়েছে। পুরনো শিক্ষা কারিকুলাম বাদ দিয়ে ডিসেম্বরের আগেই পূর্বের নিয়মে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত প্রায় এক কোটি শিক্ষার্থীর বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে যদি নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নযোগ্য না হয় তবুও পাঠ্য বই গুলো চলতে বছরের জন্য বহাল থাকবে। অর্থাৎ পরীক্ষা আগের নিয়মে হলেও বই বর্তমানের গুলোই থাকবে।
সেক্ষেত্রে নতুন শিক্ষাক্রমের বই থেকে কিভাবে পুরনো পদ্ধতিতে অন্যন্য নবম শ্রেনীর বার্ষিক পরীক্ষা সম্পন্ন করা যায় সে ব্যাপারে কাজ করছে এনসিটিবি।
নবম শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস কেমন হবে
বাংলাদেশ জাতীয় শিক্ষাক্রম এবং পাঠ্যপস্তুক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জানা গিয়েছে, এবারের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের সহ ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস সংক্ষিপ্ত ভাবে তৈরি করতে তারা কাজ করে যাচ্ছে। শুধুমাত্র মাধ্যমিক পর্যায়ের ৪ টি শ্রেণীর বই থেকে পুরনো পদ্ধতিতে প্রশ্ন তৈরি করার উপযোগী টপিক গুলো খুজে বের করা হচ্ছে।
সেই অনুযায়ী ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস এবং মূল্যায়ন পদ্ধতিও সংশোধনের কাজ চলছে। নতুন অভিজ্ঞতা নির্ভর শিক্ষার বইয়ের কোন কোন অংশ থেকে আগের পদ্ধতিতে লিখিত পরীক্ষা নেওয়া যাবে তা খুঁজে বের করে শিক্ষার্থীদের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছেন এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক একেএম রিয়াজুল হাসান।
রিয়াজুল হাসান একটি বিজ্ঞপ্তিতে গণমাধ্যমকে জানান, বাংলাদেশের মাধ্যমিক পর্যায়ে নতুন যে পাঠক্রমটি বাস্তবায়ন শুরু হয়েছিল সেটি মূলত অভিজ্ঞতা নির্ভর লেখাপড়া ছিল। কিন্তু বর্তমানে শিক্ষা মন্ত্রণালয় আগের পাঠক্রমের আদলে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যেহেতু বই গুলো অভিজ্ঞতা নির্ভর তাই এখান থেকে আগের নিয়মে লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার জন্য প্রশ্নপত্র তৈরি করা এবং সিলেবাস তৈরি করে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্ন কাঠামো প্রস্তুত করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে শিক্ষক এবং পাঠক্রম কারিকুলাম বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতা নিয়ে সিলেবাস এবং প্রশ্ন কাঠামোর জন্য খসড়া তৈরি করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন অষ্টম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা সহ মাধ্যমে অন্যান্য শ্রেণীর পরীক্ষা হবে ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের আদলে। সেই অনুযায়ী প্রতিটি বিষয় থেকে ছোট প্রশ্ন এবং বড় প্রশ্ন সমন্বয়ের পরীক্ষা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে মাউশিরপরিচালক প্রফেসর জাফর আলী সাংবাদিকদের কে জানান, আমাদের দেশে মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রায় এক কোটির বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদেরকে অভিজ্ঞতা নির্ভর বই এ বছর প্রদান করা হলেও বছর শেষে বার্ষিক পরীক্ষা হবে সৃজনশীল পদ্ধতির অনুযায়ী। তবে এ ব্যাপারে পরীক্ষার সিলেবাস আমরা এখনো হাতে পাইনি তবে এটা নিয়ে কর্তৃপক্ষ এখনো কাজ করে যাচ্ছে। কাজ শেষ হলে খুব দ্রুত সিলেবাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে বিভিন্ন মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কাছ থেকে জানা যায়, তারা বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন সিদ্ধান্ত শোনার পর শিক্ষার্থীদের কে জ্ঞান নির্ভর পড়াশোনা করানোর কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের মৌলিক বিষয়ের উপর পাঠ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। যাতে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণী বার্ষিক পরীক্ষার বিষয়ে ভবিষ্যতে যে কোন নির্দেশনা এলে সেটির সাথে খাপ খাইয়ে নেয়া যায়।
যতদূর সম্ভব অষ্টম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা এবং ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার রূপরেখা জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০১২ এর মতই হবে।
নবম শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস এবং মূল্যায়ন
ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার মূল্যায়ন কার্যক্রম হবে মোট ১০০ নম্বরের ভিত্তিতে। যার মধ্যে শিখনকালীন বিভাগ থেকে মূল্যায়ন হবে ৩০% এবং পরীক্ষার গুরুত্ব থাকবে ৭০ শতাংশ।
ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস এবং শিখনকালীন মূল্যায়ন
শিখনকালীন মূল্যায়ন নেওয়ার জন্য পাঠ্যপুস্তক বইয়ে যে নির্দেশিত একক কাজ, জোড়ায় জোড়ায় কাজ, প্রেজেন্টেশনসহ অন্যন্য যে মূল্যায়ন গুলো দেওয়া রয়েছে সেগুলোকে মূল্যায়ন আইটেম হিসেবেই বিবেচনা করা হবে। তারপর মূল্যায়ন পরিচালনার জন্য প্রতি বিষয় ভিত্তিক আলাদা করে নির্দেশনা গুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করা হবে।
ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা শিখন কালীন মূল্যায়ন কার্যক্রম মূল পরীক্ষার শুরুর আগেই সম্পন্ন করতে হবে এবং সেই রেকর্ড গুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
লিখিত পরীক্ষা
অষ্টম শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষার সহ মাধ্যমিক পর্যায়ের সব গুলো শ্রেণীতে প্রতিটি বিষয়ে ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। লিখিত পরীক্ষা দেওয়ার জন্য নির্ধারিত সময় হবে মোট ৩ ঘন্টা।
বিগত পাঠক্রম অনুযায়ী নবম এবং দশম শ্রেণীতে বিভাগ পদ্ধতি বাতিল করার পর সিদ্ধান্ত হয়েছিলো এইচএসসি বা সমমান শ্রেণীতে শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী বিজ্ঞান, মানবিক এবং ব্যবসায় শাখায় ভর্তি হতে পারবে।
সেই অনুযায়ী ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণীর বিভিন্ন পরীক্ষার পাঠক্রম এবং প্রশ্নপত্র পদ্ধতি প্রণয়ন করা হয়েছিল। যে পাঠক্রম অনুযায়ী ইতিমধ্যে বছরের প্রায় অর্ধেক সময় সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। এরকম সিদ্ধান্তে তখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং অভিভাবকদের মধ্যে বেশ আলোচনা এবং সমালোচনা হয়েছিল।
এছাড়াও অন্তর্বতীকালীন সরকার গঠিত হওয়ার পর মন্ত্রণালয় থেকে আরো কিছু দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়। যে নির্দেশনার মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষাস্তরের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণীর পাঠ্য বই গুলোতে প্রয়োজনীয় সংশোধন এবং পরিমার্জন করে প্রণয়ন করা হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে পঞ্চম শ্রেণীতে সাধারণত পিএসসি বা প্রাইমারি স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
তারপর মাধ্যমিক পর্যায়ে ষষ্ঠ এবং সপ্তম শ্রেণীর পাঠক্রম সম্পন্ন করার পরে জেএসসি পরীক্ষা সম্পন্ন হতো। অষ্টম শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষা পদ্ধতি তখন ছিল না। সাধারণত অষ্টম শ্রেণীর অর্ধ বার্ষিকী পরীক্ষা সম্পন্ন করার পর জেএসসি পরীক্ষার জন্য টেস্ট পরীক্ষা নেওয়া হতো। জেএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা পরবর্তীতে নবম শ্রেণীতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেতাম।
তাই অষ্টম শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষা এবং ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষার ক্ষেত্রে পূর্বের পাঠক্রম পদ্ধতি ফিরিয়ে আনার কাজ চলছে। খুব শীঘ্রই শিক্ষা মন্ত্রণালয় হতে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেওয়া হবে।
প্রস্রাবে জ্বালাপোড়ার কারণ এবং ঘরোয়া প্রতিকার গুলি জানতে এখানে প্রবেশ করুন।