বিষন্নতা থেকে মুক্তির উপায় কি জেনে নিন
- আপডেট সময় : ০৪:১২:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৩৩ বার পড়া হয়েছে
প্রতিটি মানুষের জীবনে এমন কোন নেতিবাচক অভ্যাস কিংবা ঘটনা রয়েছে যেগুলো তাদেরকে মানসিক ভাবে দুর্বল করে ফেলে। কিন্তু এই বিষন্নতা থেকে মুক্তির উপায় কি? যদি আপনি এটা থেকে নিজেকে বের করার চেষ্টা না করে তাহলে আস্তে আস্তে আপনি মনের ভেতর থেকে ভেঙে পড়বেন। আর এর প্রভাব পড়বে আপনার ভবিষ্যৎ জীবনেও।
বিষন্নতা থেকে মুক্তির উপায় কি
আজকের এই লেখাটির মাধ্যমে আপনাদের মানসিকভাবে শক্ত হওয়ার উপায় এবং বিষন্নতা দূর করার উপায় গুলি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো কারণ সহ। তাই আপনি যদি এই সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন তাহলে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
অলস জীবন ধারা ত্যাগ করুন
কথায় আছে অলস মস্তিষ্কে শয়তানের আসর। অর্থাৎ আপনি নিজেকে যত বেশি কাজ বিহীন অবস্থায় রাখবেন আপনাকে বিষন্নতা তত বেশি ঘিরে ধরবে। আপনি কোন কাজ করেন না কিংবা শারীরিক পরিশ্রমও করেন না এতে বলা যায় আপনি বেশ মানুষ। এর কারণে মানসিক সমস্যার পাশাপাশি না ধরনের শারীরিক সমস্যাও দেখা দেয়।
তাই অন্তত প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ মিনিট ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। ব্যায়াম করতে ভালো না লাগলে ফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবল, ব্যাডমিন্টন ইত্যাদি খেলাধুলার চেষ্টা করুন। এতে করে দেখবেন আপনার আর জিমে যেতে হবে না।
আর আপনি যদি বেকার হয়ে থাকেন কিংবা কোন লেখাপড়া না থাকে তাহলে কোন কোন কাজে লেগে পর। তাহলে দেখবেন সকল ধরনের মনের দুর্বলতা কেটে গেছে।
অতিরিক্ত সময় মোবাইল কম্পিউটার থেকে দূরে থাকুন
বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে মোবাইল এবং কম্পিউটার আমাদের বিনোদনের অন্যতম উৎস। কিন্তু বেশি বেশি এগুলো চালাতে গিয়ে আমাদের মস্তিষ্কে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। যার সর্বশেষ ফলাফল হচ্ছে বিষন্নতা।
এসকল ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের নীল আলো আমাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। তাই এই ধরনের আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার কমিয়ে দিয়ে বই পড়া, বাগান করা, রান্না করা, ঘর গোছানো ইত্যাদি কাজ করে সময় কাটান। বিষন্নতা দূর করার উপায় গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে
যদি আপনি রাতের বেলা কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ভালোভাবে ঘুমোতে পারেন তাহলে আপনি মানসিকভাবে অনেকটাই সুস্থ থাকবেন। সে হয়তো দেখবেন মন মেজাছে অনেকটা পরিবর্তন এসেছে। অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকা মানসিক বিষন্নতার কারণ গুলোর মধ্যে অন্যতম।
যদি যথাসময়ে ঘুম না আসে তাহলে মেডিটেশন করতে পারেন।
বিষন্নতা দূর করার উপায় হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ বৃদ্ধি
অনেক সময় নিজেদের মনের অসুখের কারণে আমরা সমাজের আর সকল মানুষ থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে ফেলি। যার কারণে সোসাইটির সকল মানুষদের সন্নিদ্ধে না থাকার ফলে আস্তে আস্তে তাদের প্রতি একটা অনীহা সৃষ্টি হয়ে যায়। বাড়তে থাকে একাকীত্ব। আর এই একাকীত্ব থেকে শুরু হয় বিষন্নতা। তাই আপনার আশেপাশের পাড়া প্রতিবেশী যাদেরকে আপনার ভালো লাগে তাদের সাথে কম বেশি কথাবার্তা এবং চলাফেরা করুন।
সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা
ইদানিং আমাদের প্রায় সবারই অভ্যাস আছে বাইরে জাঙ্ক ফুড কিংবা ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া। এসকল খাবারের ফলে আমাদের শরীর অনেকটাই ভেঙে পড়ে এবং দুর্বলতা অনুভব হয়। এছাড়া দেখা যায় না রকম শারীরিক সমস্যা। যদিও এটি সরাসরি বিষন্নতা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় সাথে জড়িত নয় তারপরেও সুস্থ জীবনের জন্য দরকার সঠিক খাদ্যাভ্যাস।
প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি এবং মৌসুমী ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে করে শরীর ভালো থাকবে আর মনও ভালো থাকবে।
নিজেকে নিয়ে হীনমন্যতায় ভোগা
বিষন্নতার কারণ গুলোর মধ্যে একটি অন্যতম হচ্ছে নিজেকে নিয়ে হীনমন্যতায় ভোগা। অনেক সময় আমরা চারপাশের পরিবেশের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারি না। মনের মধ্যে সবসময় ঘুরপাক খেয়ে থাকে আমার মধ্যে কি কি কমতি আছে। আরেকজনের কি আছে সেগুলো নিয়ে আমরা সব সময় মাথার মধ্যে চিন্তা করে থাকি।
তাই নিজের যা আছে সেটা নিয়ে খুশি থাকার চেষ্টা করুন। আর নিজের যে লক্ষ্য আছে সেদিকে ফোকাস করার চেষ্টা করুন। সেই সাথে অন্যের সমালোচনা কে প্রাধান্য না দিয়ে সব সময় নিজের সিদ্ধান্ত।
বিষন্নতা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার
আমরা সাধারণত নিজের পজিটিভ এবং অর্জন গুলোকে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলোতে পোস্ট করে থাকি। আমাদের মত করে আর বাকি সবাই ঠিক একই কাজ করে। এতে করে সব সময় মনে হয় আমার অমুক বন্ধু কিংবা আত্মীয়-স্বজন জীবনে অনেক সুখী।
এরকম মনে হওয়ার পেছনে একটা কারণ রয়েছে, কারণ কেউ নিজের ব্যর্থতাকে উপস্থাপন করে না সব সময় সফলতা এবং ভালো দিক গুলোকে উপস্থাপন করে থাকে। কিন্তু সবারই এই সকল চাকচিক্য জীবনের আড়ালে রয়েছে কঠিন বাস্তবতা। তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই সকল চাকচিক্যময় জীবন দেখে নিজেকে ছোট ভাববেন না। আপনি অন্য সবার থেকে সুখী এমনটাই ভাবতে শিখুন।
আমাদের শেষ কথা
আশা করি বিষন্নতা থেকে মুক্তির উপায় গুলি সম্পর্কে আপনাদের জানা হয়ে গেছে। এত কিছুর পরেও যদি আপনি মানসিকভাবে শান্তি না পান তাহলে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হন। যদিও এই ধরনের সমস্যা আপনি একা একাই কাটিয়ে উঠতে পারবেন কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন জীবনের পরিবর্তন আনা।
নিটল নিলয় গ্রুপে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৪, বিস্তারিত জানতে এখানে প্রবেশ করুন।