ঢাকা ০৬:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সারা দিনে কতবার প্রস্রাব হওয়া স্বাভাবিক?

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:১৫:৪৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৬ বার পড়া হয়েছে

সারা দিনে কতবার প্রস্রাব হওয়া স্বাভাবিক

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পৃথিবী জুড়ে ডায়াবেটিস একটি নীরব ঘাতক হিসেবে পরিচিত। তাইতো দিনে কতবার প্রস্রাব স্বাভাবিক এই বিষয়টি নিয়ে অনেকেই ঘাটঘাটি করতে দেখা যায়। কারণ স্বাভাবিকের চাইতে কয়েকবার বেশি ওয়াশরুমে যাওয়ার প্রয়োজন হলে মনে মনে সন্দেহ দেখা দেয় আমার কি ডায়াবেটিস হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ডায়াবেটিস টাইপ-১ এবং টাইপ-২ ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের দীর্ঘস্থায়ী ডায়াবেটিসের টাইপ রয়েছে। টাইপ ১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে ইমিউন সিস্টেম নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে আমাদের দেহে পর্যাপ্ত পরিমাণে ইনসুলিন উৎপন্ন হয় না। আর এই ধরনের ডায়াবেটিসের প্রধান লক্ষণ হলো ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া।

দিনে কতবার প্রস্রাব করা স্বাভাবিক?

সাধারণত যে সকল রোগীদের ডায়াবেটিসের পরিমাণ বেশি তাদের শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণে গ্লুকোজ উৎপন্ন হয়। যে কারণে দেহের কিডনি সেই অতিরিক্ত পরিমাণ গ্লুকোজ ফিল্টার এবং শোষণ করে থাকে। কিন্তু একটু সময় পড়ে সেটি আর ফিল্টার এবং শোষণ করা সম্ভব হয় না। তাই অতিরিক্ত গ্লুকোজ গুলি আমাদের প্রস্রাবের সাথে বের হয়ে আসে। যার কারণে দেহে পানি শূন্যতা দেখা দিতে থাকে।

এর ফলে ডায়াবেটিস রোগীরা পানি পান করলে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া শুরু হয়।

দিনে কতবার প্রস্রাব হওয়া স্বাভাবিক?

একজন সুস্থ এবং প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ২৪ ঘন্টায় অন্ততপক্ষে ২ লিটার পানি পান করা উচিত। এই হিসাবে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দিনে অন্তত ৬ থেকে ৮ বার প্রস্রাব হওয়া স্বাভাবিক বিষয়। এমনকি দিনে ৪ থেকে ১০ বার বাথরুম কিংবা প্রস্রাব করলেও সেটিকে স্বাভাবিক বলে ধরে নেওয়া যায়। কারণ এতে করে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কোন ব্যাঘাত করে না এবং খুব বেশি চিন্তারও কোনো কারণ নেই। কিন্তু এর বেশি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

আবার কেউ যদি দিনে ৭ থেকে ১০ বারের বেশি প্রস্রাব করে তাহলে ধারণা করা যেতে পারে সে টাইপ ১ অথবা টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।

আমেরিকার ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসে গবেষণা এবং তথ্য অনুযায়ী একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর যদি দৈনিক ৩ লিটার পানি পান করে তাহলে গুরুতর পরিস্থিতিতে ২ লিটার পর্যন্ত প্রস্রাব হতে পারে।

এক্ষেত্রে সে রোগের কিছুক্ষণ পর পরই পানির তৃষ্ণা পাবেন। বারবার পানি পান করলেও বারবার এই পানির তৃষ্ণা পাবে এবং মুখ শুকনো লাগবে।

আবার অনেক সময় ডায়াবেটিস ছাড়াও মূত্রাশয়ে বিভিন্ন সমস্যা থাকলেও ঘন ঘন প্রস্রাব হতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে ঘনঘন প্রস্রাব হওয়ার পরেও কেউ যদি শারীরিকভাবে স্বাভাবিক এবং সুস্থ অনুভব করেন তাহলে এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই।

ঘন ঘন প্রস্রাব মানেই কি ডায়াবেটিস?

ডায়াবেটিস ছাড়া যে সকল কারণে ঘনঘন প্রস্রাব পেতে পারে শেষ কারণ গুলো নিচে দেওয়া হলো;

• মুত্রনালী বা মূত্রথলিতে সংক্রমণ। অনেক সময় বিভিন্ন রকম সংক্রামক রোগের কারণে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

• নারীদের ক্ষেত্রে গর্ভকালীন সময়ের প্রথম এবং শেষ দিকে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়াটা স্বাভাবিক।

• বয়স্ক পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রোটেস্ট গ্রন্থির সমস্যার কারণে বারবার ওয়াশরুমে যাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

• রক্তে ক্যালসিয়াম বা পটাশিয়ামের তারতম্য হলেও দিনে বারবার প্রস্রাব হতে পারে।

আমাদের শেষ কথা

আশা করি দিনে কতবার প্রস্রাব হওয়ার স্বাভাবিক সে সম্পর্কে আপনারা কিছুটা ধারণা লাভ করতে পেরেছেন। তবে ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া মানেই যে ডায়াবেটিস বিষয়টি সঠিক নয়। এই সমস্যাটি শুধুমাত্র একটি রোগের উপসর্গ কিন্তু কোন রোগ নয়।

এছাড়াও তীব্র গরমে আমাদের স্বাভাবিকের তুলনায অনেকটাই বেশি পানি পান করা হয়ে থাকে। যার কারণে দৈনিক ১০ বার কিংবা তার চাইতে বেশি সময়ও ওয়াশরুমে যাওয়ার প্রয়োজন হয়। কিন্তু আপনি যদি শারীরিকভাবে দুর্বল অনুভব করেন কিংবা অন্যান্য সমস্যা দেখা যায় তাহলে ওদের দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

জনপ্রিয় ক্রিকেটার রোনালদো কত টাকার মালিক, বিস্তারিত জানতে এখানে প্রবেশ করুন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

সারা দিনে কতবার প্রস্রাব হওয়া স্বাভাবিক?

আপডেট সময় : ০৯:১৫:৪৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পৃথিবী জুড়ে ডায়াবেটিস একটি নীরব ঘাতক হিসেবে পরিচিত। তাইতো দিনে কতবার প্রস্রাব স্বাভাবিক এই বিষয়টি নিয়ে অনেকেই ঘাটঘাটি করতে দেখা যায়। কারণ স্বাভাবিকের চাইতে কয়েকবার বেশি ওয়াশরুমে যাওয়ার প্রয়োজন হলে মনে মনে সন্দেহ দেখা দেয় আমার কি ডায়াবেটিস হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ডায়াবেটিস টাইপ-১ এবং টাইপ-২ ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের দীর্ঘস্থায়ী ডায়াবেটিসের টাইপ রয়েছে। টাইপ ১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে ইমিউন সিস্টেম নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে আমাদের দেহে পর্যাপ্ত পরিমাণে ইনসুলিন উৎপন্ন হয় না। আর এই ধরনের ডায়াবেটিসের প্রধান লক্ষণ হলো ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া।

দিনে কতবার প্রস্রাব করা স্বাভাবিক?

সাধারণত যে সকল রোগীদের ডায়াবেটিসের পরিমাণ বেশি তাদের শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণে গ্লুকোজ উৎপন্ন হয়। যে কারণে দেহের কিডনি সেই অতিরিক্ত পরিমাণ গ্লুকোজ ফিল্টার এবং শোষণ করে থাকে। কিন্তু একটু সময় পড়ে সেটি আর ফিল্টার এবং শোষণ করা সম্ভব হয় না। তাই অতিরিক্ত গ্লুকোজ গুলি আমাদের প্রস্রাবের সাথে বের হয়ে আসে। যার কারণে দেহে পানি শূন্যতা দেখা দিতে থাকে।

এর ফলে ডায়াবেটিস রোগীরা পানি পান করলে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া শুরু হয়।

দিনে কতবার প্রস্রাব হওয়া স্বাভাবিক?

একজন সুস্থ এবং প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ২৪ ঘন্টায় অন্ততপক্ষে ২ লিটার পানি পান করা উচিত। এই হিসাবে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দিনে অন্তত ৬ থেকে ৮ বার প্রস্রাব হওয়া স্বাভাবিক বিষয়। এমনকি দিনে ৪ থেকে ১০ বার বাথরুম কিংবা প্রস্রাব করলেও সেটিকে স্বাভাবিক বলে ধরে নেওয়া যায়। কারণ এতে করে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কোন ব্যাঘাত করে না এবং খুব বেশি চিন্তারও কোনো কারণ নেই। কিন্তু এর বেশি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

আবার কেউ যদি দিনে ৭ থেকে ১০ বারের বেশি প্রস্রাব করে তাহলে ধারণা করা যেতে পারে সে টাইপ ১ অথবা টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।

আমেরিকার ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসে গবেষণা এবং তথ্য অনুযায়ী একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর যদি দৈনিক ৩ লিটার পানি পান করে তাহলে গুরুতর পরিস্থিতিতে ২ লিটার পর্যন্ত প্রস্রাব হতে পারে।

এক্ষেত্রে সে রোগের কিছুক্ষণ পর পরই পানির তৃষ্ণা পাবেন। বারবার পানি পান করলেও বারবার এই পানির তৃষ্ণা পাবে এবং মুখ শুকনো লাগবে।

আবার অনেক সময় ডায়াবেটিস ছাড়াও মূত্রাশয়ে বিভিন্ন সমস্যা থাকলেও ঘন ঘন প্রস্রাব হতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে ঘনঘন প্রস্রাব হওয়ার পরেও কেউ যদি শারীরিকভাবে স্বাভাবিক এবং সুস্থ অনুভব করেন তাহলে এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই।

ঘন ঘন প্রস্রাব মানেই কি ডায়াবেটিস?

ডায়াবেটিস ছাড়া যে সকল কারণে ঘনঘন প্রস্রাব পেতে পারে শেষ কারণ গুলো নিচে দেওয়া হলো;

• মুত্রনালী বা মূত্রথলিতে সংক্রমণ। অনেক সময় বিভিন্ন রকম সংক্রামক রোগের কারণে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

• নারীদের ক্ষেত্রে গর্ভকালীন সময়ের প্রথম এবং শেষ দিকে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়াটা স্বাভাবিক।

• বয়স্ক পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রোটেস্ট গ্রন্থির সমস্যার কারণে বারবার ওয়াশরুমে যাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

• রক্তে ক্যালসিয়াম বা পটাশিয়ামের তারতম্য হলেও দিনে বারবার প্রস্রাব হতে পারে।

আমাদের শেষ কথা

আশা করি দিনে কতবার প্রস্রাব হওয়ার স্বাভাবিক সে সম্পর্কে আপনারা কিছুটা ধারণা লাভ করতে পেরেছেন। তবে ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া মানেই যে ডায়াবেটিস বিষয়টি সঠিক নয়। এই সমস্যাটি শুধুমাত্র একটি রোগের উপসর্গ কিন্তু কোন রোগ নয়।

এছাড়াও তীব্র গরমে আমাদের স্বাভাবিকের তুলনায অনেকটাই বেশি পানি পান করা হয়ে থাকে। যার কারণে দৈনিক ১০ বার কিংবা তার চাইতে বেশি সময়ও ওয়াশরুমে যাওয়ার প্রয়োজন হয়। কিন্তু আপনি যদি শারীরিকভাবে দুর্বল অনুভব করেন কিংবা অন্যান্য সমস্যা দেখা যায় তাহলে ওদের দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

জনপ্রিয় ক্রিকেটার রোনালদো কত টাকার মালিক, বিস্তারিত জানতে এখানে প্রবেশ করুন।