সংসারে সুখী হওয়ার টিপস
- আপডেট সময় : ০৫:৪৭:৪০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৬ বার পড়া হয়েছে
একটি সংসারের সুখ এবং স্বাচ্ছন্দ্য নির্ভর করে মূলত নারী এবং পুরুষ দুই জনেরই উপরে। এর জন্য দুজনকেই খুবই আন্তরিক হতে হয় এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে সেক্রিফাইস করার মানসিকতা থাকতে হয়। এতে করে সংসারের ভীত এবং সম্পর্ক আরো বেশি মজবুত হয়। তাই সংসারের সুখী হওয়ার পূর্ব শর্ত হচ্ছে নিজেদের সম্পর্কের বোঝাপড়া ভালোভাবে করা।
আজকাল সামান্য কারণেই অনেক দিনের প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যায়। আবার অনেক সময় সেটি টিকে থাকলেও শুরু হয় নানা তিক্ত অভিজ্ঞতা। এই তিক্ততা থেকে পরবর্তীতে বিবাহ বিচ্ছেদ পর্যন্ত ঘটে যেতে পারে। কিন্তু যারা যুগের পর যুগ ধরে একসাথে বসবাস করে আসছেন তারা কি নিজেদের ভালোবাসার অনুভূতি ধরে রাখতে পারেন? কিভাবে সংসার সুখের হয় কিংবা সম্পর্কের ভিত মজবুত হয় এর সম্পর্কিত কিছু অভ্যাস চলুন জেনে নেই:
সঙ্গী কে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা
পৃথিবীতে কাউকেই নিজের ইচ্ছা মত চলতে বাধ্য করা কিংবা জোর করা উচিত নয়। এটি মস্ত বড় ভুল। কারণ প্রত্যেক মানুষেরই নিজস্ব স্বকীয়তা রয়েছে এবং ব্যক্তি স্বাধীনতা রয়েছে। তাই সংসার সুখের করার জন্য আপনার সঙ্গী কে নিজের ইচ্ছামত চলতে দিন। বরং তার কোন বিষয় কিংবা আচরণ আপনার অপছন্দ থাকলে তাকে সেটি ভালোভাবে বোঝাার চেষ্টা করুন।
কিন্তু কোন মানুষকে বদলাতে চেষ্টা করবেন না এতে করে এদের বিপরীত হতে পারে।
নিজে হারতে শিখুন
সংসার জীবনে আমাদের প্রায়ই তর্ক বিতর্ক লেগে যায় শুধুমাত্র নিজের সিদ্ধান্ত এবং মনোভাব কে সঠিক প্রমাণিত করার জন্য। কিন্তু এতে করে আপনার বুদ্ধিহীনতারই প্রমাণ দেখা মিলে।
এমনকি নিজের রাগ কিংবা মেজাজ হারিয়ে ফেলার পরেও ইগো ধরে রেখে সবকিছু থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়াটাও সংসারে অশান্তি লক্ষণ। আপনি হয়তো বা মনে মনে ভাবছেন ও আমার দিকটা কেন বুঝতে পারছে না কিংবা আমার রাগ কেন ভাঙাচ্ছে না। এরকম আচরণ একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে কখনোই মানায় না। এভাবে সব সময় আপনি হেরে যাবেন।
ম্যাচিওর এবং প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সব সময় নিজের হার স্বীকার করে এবং অনেক ক্ষেত্রে সঠিক থেকেও নিজেকে ভুল বলে ব্যাখ্যা দেয়। সংসারের সুখের জন্য এইটুকু সেক্রিফাইস এবং হার তো মেনে নেওয়াই যায়।
সংসারে সুখী হওয়ার টিপস
বিপদে বন্ধু হয়ে থাকা
এখনকার বেশিরভাগ দাম্পত্য সঙ্গী রাই কোন না কোন চাকরি কিংবা কাজের সাথে যুক্ত থাকে। অনেক ক্ষেত্রে মেয়েরা চাকরি না করলেও ঘর এবং পরিবার সামলাতে গিয়ে নানা রকম বিপদ কিংবা ঝামেলার শিকার হতে হয়। এক্ষেত্রে আপনার সঙ্গী কে কখনোই এড়িয়ে যাবেন না কিংবা তার ঝামেলা গুলিকে পুরোপুরি তার উপর ছেড়ে দেবেন না। বিপদের সঙ্গীর বন্ধু হয়ে থাকা সংসার সুখের অন্যতম চাবিকাঠি। তাই আপনার সঙ্গীর বিপদকে নিজের বিপদ মনে করে তার পাশে থাকুন।
যথেষ্ট সময় দিন
কর্মব্যস্ততার ফাঁকে যদিও কিছুটা সময় বের করা অনেক কঠিন তারপরেও চেষ্টা করুন আপনার সঙ্গী কে যথাসম্ভব সময় দেওয়া। এতে করে সংসারের সুখ নেমে আসবে। গুরুত্ব দিয়ে সময দেওয়া কিংবা মাঝে মাঝে ঘুরতে নিয়ে যাওয়া এতে করে আপনারও মন ভালো থাকবে আপনার সঙ্গীর ও ভরসা বৃদ্ধি পাবে।
সরি এবং থ্যাংক ইউ বলা
আমরা বাইরে প্রফেশনাল জীবনে সরি এবং থ্যাংক ইউ শব্দ দুটি ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু আমাদের পরিবারের একজন লোককে কি এটি প্রায়ই বলে থাকি?
শুধুমাত্র জীবন সঙ্গিনী নয় বরং পরিবারের প্রতিটি লোকের সাথে এই শব্দ দুটি ব্যবহার করার অভ্যাস করুন। এতে করে সম্পর্কের ভিত আরও মজবুত হবে।
বাবা মাকে নিয়ে কখনোই কোথাও না বলা
দুই মানুষ দুই ফ্যামিলি থেকে একত্রিত হওয়ায় বাবা মা কিংবা পরিবারের অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনকে নিয়ে প্রায়ই কথা শুনতে হয়। আপনার যদি আপনার পার্টনারের কোন আত্মীয়-স্বজন কিংবা ফ্যামিলি মেম্বারকে পছন্দ না হয় তাহলে সেটি কখনোই সরাসরি স্বামী কিংবা স্ত্রীকে জানাতে যাবেন না। এতে করে মনের মধ্যেও একটি বিরূপ ধারণা তৈরি হতে পারে। তাই সবসময় চেষ্টা করুন পজেটিভ পরিবেশ তৈরি করার জন্য।
সংসারে তৃতীয় ব্যক্তি
কয়েকজন মানুষ একত্রে থাকতে গেলে তাদের ভিতরে ঝামেলা কিংবা মনোমালিন্য হতে পারে। কিন্তু এই ব্যাপার গুলোর সমাধান করার জন্য অনেক সময় আমরা তৃতীয় পক্ষের সহায়তা নেই। এতে করে দুজন স্বামী স্ত্রী কিংবা পার্টনারের ভেতরে আরও বেশি দূরত্ব তৈরি হয়। তাই কোন তৃতীয় ব্যক্তির সহযোগিতা ছাড়াই নিজেদের ভিতর বোঝাপড়া করার চেষ্টা করুন।
সংসার সুখী হওয়া যেমন সহজ তেমনি আমাদের কিছু সামান্য ভুলের কারণে এটি দিন দিন জটিল হয়ে ওঠে। আপনি যত বেশি সেক্রিফাইস এবং উন্মুক্ত মন মানসিকতার হতে পারবেন সংসার জীবনে তত বেশি সুখী হতে পারবেন।
কোন সময় চুপ থাকা বুদ্ধিমানের কাজ, বিস্তারিত জানতে এখানে প্রবেশ করুন।