ঢাকা ০১:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জেনে নিন শিরক কাকে বলে ও কত প্রকার

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:১৯:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪ ২৯ বার পড়া হয়েছে

শিরক কাকে বলে ও কত প্রকার

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আরবি ভাষার একটি শব্দ হচ্ছে শিরক। আমরা যারা মুসলমান তারা সবাই এই শব্দটি সম্পর্কে এর আগেই শুনেছে। আরবি পরিভাষায় এই শব্দটির অর্থ হচ্ছে অংশীদারিত্ব করা কিংবা সমকক্ষ তুলনা করা। আপনারা নিশ্চয়ই স্কুল জীবনে বইয়ে এই সম্পর্কে কিছুটা জেনেছেন। আজকের এই লেখাটার মাধ্যমে আমি বিশদ আলোচনা করব।

শিরক কাকে বলে

ইসলামের আদেশ অনুযায়ী মানব জীবনের বড় গুনাহ গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শিরক। এমনকি এই গুনাহ করার পর অবশ্যই মহান আল্লাহতালার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। দুনিয়াতে আপনি যদি ক্ষমা প্রার্থনা না করতে পারেন তাহলে পরকালে মহান আল্লাহ তা’আলা কখনোই আপনাকে এই গুনাহ থেকে ক্ষমা করবেন না।

অর্থাৎ আপনি যত সকল পাপই করুন না কেন সেগুলো মন আল্লাহ তা’আলা ক্ষমা করতে পারেন। কিন্তু শিরক করার পর দুনিয়া থেকেই আপনাকে ক্ষমা নিতে হবে।

যখন কোন বান্দা মহান আল্লাহ তায়ালার সমকক্ষ কাউকে বিবেচনা করে কিংবা তুলনা করে তখন সেটাকে বলা হয় শিরক। শুধুমাত্র তাই নয় ছোট ছোট কোন কথার ভুলেও এই গুনাহটি হয়ে যেতে পারে।

যেমন আমাদের সকল ধরনের পরিস্থিতিতে একমাত্র সাহায্যকারী হচ্ছেন মহান আল্লাহতালা। কিন্তু কেউ যদি কোন ব্যক্তি কিংবা বস্তুর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন তাহলে সেটিও অনেক বড় শিরক।

আবার মনের অজান্তেই আমরা এই পাপটি করে থাকি। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে লোক দেখানো ইবাদত কিংবা মহান আল্লাহ তা’আলা ছাড়া অন্য কারো নামে শপথ করাও এই পাপের অন্তর্ভুক্ত।

মহান আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন এবং জীবন যাপনের জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এমনকি মানুষের যে কোন ধরনের বিপদে আপদে একমাত্র সাহায্য প্রার্থনা করব আল্লাহর কাছে।

কিন্তু অনেকেই বুঝে কিংবা না বুঝে বিভিন্ন রোগ মুক্তির জন্য, বদনজর থেকে বাঁচার জন্য, টাকা পয়সা ইনকামের জন্য তাবিজ ইত্যাদি ব্যবহার করে। তারা মনে করে এই সকল তাবিজ কিংবা বস্তু আমাদের বিপদ কিংবা মুসিবত দূর করতে পারে। এটি পুরোপুরি ভাবে এটি শিরকের অন্তর্ভুক্ত।

অর্থাৎ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বুঝে কিংবা না বুঝেও অনেক সময় এই ধরণের গুনাহের কাজে জড়িয়ে পড়তে পারি। তাই এ সম্পর্কে আরো ভালোভাবে জানা উচিত এবং অন্যান্য সবাইকে সতর্ক করার প্রয়োজন।

শিরক কত প্রকার

ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী এটিকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেগুলো হচ্ছে;

১। শিরকে আকবর
২। শিরকে আসগার

আরো বিস্তারিতভাবে বলতে গেলে প্রথমটি অর্থাৎ শিরকে আকবারে লিপ্ত হয়ে যায় তাহলে তিনি মুমিন এবং ঈমান থেকে বের হয়ে যাবেন। সেই সাথে চিরকাল জাহান্নামে অবস্থান করবেন। এই ধরনের পাপ কাজের অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে মূর্তি পূজা করা, মহান আল্লাহ তা’আলা ছাড়া অন্য কারো কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা, শপথ করা ইত্যাদি।

আর কেউ যদি শিরকে আসগারে জড়িয়ে পড়ে তাহলে তিনি মুমিন ও ঈমান থেকে বের হয়ে যাবেন না। এটি মূলত ছোট ধরনের শিরক। যার মধ্যে হচ্ছে মানুষকে দেখানোর জন্য আমল করা, দুনিয়ায় লাভের উদ্দেশ্যে আমল করা ইত্যাদি।

এছাড়াও এই দুইটি অধীনে আরো বেশ কয়েকটি ছোট ছোট শিরকের ভাগ করা হয়েছে।

মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ্ তার সাথে শিরক করাকে ক্ষমা করেন না। এটি ছাড়া অন্য যেকোনো কিছু, যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন এবং যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার সাথে শিরক করলো, সে এক অপবাদ আরোপ করলো। (সূরা আন নিসা: ৪৮)

যেহেতু এটি অত্যন্ত গর্হিত এবং গুনাহের কাজ তাই সবসময় আমরা এর থেকে বেঁচে থাকার জন্য মহান আল্লাহতালার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করব।

আশা করি শিরক কাকে বলে, কত প্রকার এবং এর সম্পর্কিত অন্যান্য তথ্য বলি আপনাদেরকে জানাতে পেরেছি। এ ধরনের আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন।

প্রকাশিত হলো ক্যাডেট কলেজ ভর্তি বিজ্ঞপ্তি ২০২৫। আবেদনের নিয়ম জানতে এখানে প্রবেশ করুন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

জেনে নিন শিরক কাকে বলে ও কত প্রকার

আপডেট সময় : ০৫:১৯:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪

আরবি ভাষার একটি শব্দ হচ্ছে শিরক। আমরা যারা মুসলমান তারা সবাই এই শব্দটি সম্পর্কে এর আগেই শুনেছে। আরবি পরিভাষায় এই শব্দটির অর্থ হচ্ছে অংশীদারিত্ব করা কিংবা সমকক্ষ তুলনা করা। আপনারা নিশ্চয়ই স্কুল জীবনে বইয়ে এই সম্পর্কে কিছুটা জেনেছেন। আজকের এই লেখাটার মাধ্যমে আমি বিশদ আলোচনা করব।

শিরক কাকে বলে

ইসলামের আদেশ অনুযায়ী মানব জীবনের বড় গুনাহ গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শিরক। এমনকি এই গুনাহ করার পর অবশ্যই মহান আল্লাহতালার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। দুনিয়াতে আপনি যদি ক্ষমা প্রার্থনা না করতে পারেন তাহলে পরকালে মহান আল্লাহ তা’আলা কখনোই আপনাকে এই গুনাহ থেকে ক্ষমা করবেন না।

অর্থাৎ আপনি যত সকল পাপই করুন না কেন সেগুলো মন আল্লাহ তা’আলা ক্ষমা করতে পারেন। কিন্তু শিরক করার পর দুনিয়া থেকেই আপনাকে ক্ষমা নিতে হবে।

যখন কোন বান্দা মহান আল্লাহ তায়ালার সমকক্ষ কাউকে বিবেচনা করে কিংবা তুলনা করে তখন সেটাকে বলা হয় শিরক। শুধুমাত্র তাই নয় ছোট ছোট কোন কথার ভুলেও এই গুনাহটি হয়ে যেতে পারে।

যেমন আমাদের সকল ধরনের পরিস্থিতিতে একমাত্র সাহায্যকারী হচ্ছেন মহান আল্লাহতালা। কিন্তু কেউ যদি কোন ব্যক্তি কিংবা বস্তুর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন তাহলে সেটিও অনেক বড় শিরক।

আবার মনের অজান্তেই আমরা এই পাপটি করে থাকি। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে লোক দেখানো ইবাদত কিংবা মহান আল্লাহ তা’আলা ছাড়া অন্য কারো নামে শপথ করাও এই পাপের অন্তর্ভুক্ত।

মহান আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন এবং জীবন যাপনের জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এমনকি মানুষের যে কোন ধরনের বিপদে আপদে একমাত্র সাহায্য প্রার্থনা করব আল্লাহর কাছে।

কিন্তু অনেকেই বুঝে কিংবা না বুঝে বিভিন্ন রোগ মুক্তির জন্য, বদনজর থেকে বাঁচার জন্য, টাকা পয়সা ইনকামের জন্য তাবিজ ইত্যাদি ব্যবহার করে। তারা মনে করে এই সকল তাবিজ কিংবা বস্তু আমাদের বিপদ কিংবা মুসিবত দূর করতে পারে। এটি পুরোপুরি ভাবে এটি শিরকের অন্তর্ভুক্ত।

অর্থাৎ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বুঝে কিংবা না বুঝেও অনেক সময় এই ধরণের গুনাহের কাজে জড়িয়ে পড়তে পারি। তাই এ সম্পর্কে আরো ভালোভাবে জানা উচিত এবং অন্যান্য সবাইকে সতর্ক করার প্রয়োজন।

শিরক কত প্রকার

ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী এটিকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেগুলো হচ্ছে;

১। শিরকে আকবর
২। শিরকে আসগার

আরো বিস্তারিতভাবে বলতে গেলে প্রথমটি অর্থাৎ শিরকে আকবারে লিপ্ত হয়ে যায় তাহলে তিনি মুমিন এবং ঈমান থেকে বের হয়ে যাবেন। সেই সাথে চিরকাল জাহান্নামে অবস্থান করবেন। এই ধরনের পাপ কাজের অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে মূর্তি পূজা করা, মহান আল্লাহ তা’আলা ছাড়া অন্য কারো কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা, শপথ করা ইত্যাদি।

আর কেউ যদি শিরকে আসগারে জড়িয়ে পড়ে তাহলে তিনি মুমিন ও ঈমান থেকে বের হয়ে যাবেন না। এটি মূলত ছোট ধরনের শিরক। যার মধ্যে হচ্ছে মানুষকে দেখানোর জন্য আমল করা, দুনিয়ায় লাভের উদ্দেশ্যে আমল করা ইত্যাদি।

এছাড়াও এই দুইটি অধীনে আরো বেশ কয়েকটি ছোট ছোট শিরকের ভাগ করা হয়েছে।

মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ্ তার সাথে শিরক করাকে ক্ষমা করেন না। এটি ছাড়া অন্য যেকোনো কিছু, যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন এবং যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার সাথে শিরক করলো, সে এক অপবাদ আরোপ করলো। (সূরা আন নিসা: ৪৮)

যেহেতু এটি অত্যন্ত গর্হিত এবং গুনাহের কাজ তাই সবসময় আমরা এর থেকে বেঁচে থাকার জন্য মহান আল্লাহতালার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করব।

আশা করি শিরক কাকে বলে, কত প্রকার এবং এর সম্পর্কিত অন্যান্য তথ্য বলি আপনাদেরকে জানাতে পেরেছি। এ ধরনের আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন।

প্রকাশিত হলো ক্যাডেট কলেজ ভর্তি বিজ্ঞপ্তি ২০২৫। আবেদনের নিয়ম জানতে এখানে প্রবেশ করুন।