ঢাকা ০২:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জমি বন্ধক রাখার ব্যাপারে ইসলামের নির্দেশনা কি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:৫৪:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪ ৩৭ বার পড়া হয়েছে

জমি বন্ধক রাখা কি জায়েজ

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

প্রাচীনকাল থেকেই জরুরি প্রয়োজনে জমি বন্ধক রাখার প্রচলন রয়েছে। এই পদ্ধতি ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে বৈধ। তবে মানতে হবে বেশকিছু নীতিমালা। আপনি যদি এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে নিচের পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

আমাদের জরুরী টাকার প্রয়োজনে অনেক সময় জমি কিংবা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সম্পত্তি বন্ধক রাখি। তারপর পরিস্থিতি ভালো হলে টাকার বিনিময়ে সেগুলো ফেরত নেই। বাংলাদেশ ও পৃথিবীর সকল স্থানেই এই প্রথা প্রচলিত রয়েছে।

এই পদ্ধতির বিষয়ে মহান আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেন, আর তোমরা যদি প্রবাসে থাকো (এখানে দেশের বাইরে অবস্থান করা বোঝানো হয়েছে), যদি কোন লেখক না পাও, তবে বন্ধকী বস্তু সমূহ হস্তগত করে রাখা উচিত। এজন্য একে অপরকে বিশ্বাস করতে পারো। এ ব্যাপারে যাকে বিশ্বাস করা হয় তার উচিত অন্যের প্রাপ্য অবশ্যই পরিশোধ করা এবং নিজের স্বীয় পালনকর্তাকে ভয় পাওয়া। তোমরা সাক্ষ্য গোপন রেখো না। কিন্তু কেউ যদি তা করে তাহলে তার অন্তর গুনাহ দ্বারা পূর্ণ হবে। মহান আল্লাহতালা সবকিছুর ব্যাপারেই অবগত আছেন। (সূরা বাকারা; ২৮৩)

আমাদের নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও বন্ধক-সুবিধা গ্রহণ করেছেন বলে বিভিন্ন হাদিসে রয়েছে। এমনকি হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসুল (সা.) একজন ইহুদীর নিকট হতে বাকিতে খাবার কিনেছিলেন। আর এজন্য নিজে বর্মকে বন্ধক রেখেছিলেন জামিন হিসেবে।

উপরোক্ত হাদিস গুলোর আলোকে আমরা এটা বলতে পারি যে জমি বন্ধক রাখা জায়েজ রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে দুটি পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। প্রথম পদ্ধতি অনুযায়ী যিনি জমি গ্রহণ করবেন তিনি সেটি ভাড়া হিসেবে নিবেন। কিছু টাকা প্রতি মাসে ভাড়া হিসেবে নির্দিষ্ট করবেন যেমন ৫০ টাকা কিংবা ১০০ টাকা। আর অগ্রিম ভাড়া হিসেবে প্রদান করবেন চুক্তি অনুযায়ী ১/২/৩ লাখ টাকা।

জমি বন্ধক রাখার ব্যাপারে ইসলামের নির্দেশনা কি

তারপর জমির মালিক সেটি ফেরত নিতে চাইলে শুধুমাত্র নামমাত্র যে ভাড়াটি নির্ধারণ করা হয়েছিল সেটি রেখে বাকি টাকা ফেরত দেবেন জমির ভাড়াটিয়া কে।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আপনার একটি জমি রয়েছে আর আপনার প্রয়োজন ৫ লক্ষ টাকা। আপনি এক ব্যক্তির সাথে চুক্তি করলেন যে, তিনি আপনাকে জমিটি রেখে প্রতি মাসে ১০০ টাকা করে ভাড়া প্রদান করবেন। আর অনেক সময়ের ভাড়া অগ্রিম হিসেবে ৫ লক্ষ টাকা দিবেন। আর যখন আপনি অগ্রিম ৫ লক্ষ টাকা শোধ করতে পারবেন তখন জমিটি আপনাকে ফেরত দেবে। যদি ২ মাস তিনি জমিটি ফেরত নেন তাহলে প্রতি মাসের ভাড়া ১০০ টাকা করে ২০০ টাকা রেখে দেবেন।

আর ইসলামের জমি বন্ধক রাখার দ্বিতীয় পদ্ধতি হলো চুক্তি করা। এটি ক্রয় বিক্রয় টাইপের চুক্তি। অর্থাৎ এক লক্ষ বা দুই লক্ষ নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে জমিটি অপরজনকে দিয়ে দিবেন অনেকটা বিক্রির মত করে। তারপর পুনরায় কিছুদিন পর সামর্থ্য হলে যেটাকে বিক্রি করেছিলেন ঠিক সেই টাকাই আগের মালিক ক্রয় করে নিবেন।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ধরুন আপনার একটি জমি রয়েছে। আপনি সেটাই বন্ধক রেখে এক লক্ষ টাকা নিতে চাচ্ছেন। এখন আপনি একজন ব্যক্তির সাথে চুক্তি করবেন সেটি বিক্রয়। দাম নির্ধারণ করা হবে এক লক্ষ টাকা। এর বিনিময়ে তার কাছে আপনি স্বল্প কিংবা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জমিতে বিক্রি করবেন। চুক্তিনামায় উল্লেখ থাকবে যেদিন আপনি এই এক লক্ষ টাকা পরিশোধ করতে পারবেন সেদিন তিনি আপনাকে জমি ফেরত দিয়ে দিবে।

আশা করি ইসলামিক শরীয়তের নিয়মে জমি বন্ধক রাখা জায়েজ কিনা এবং এর পদ্ধতি গুলো কি কি সে সম্পর্কে আপনারা সুস্পষ্ট ভাবে জানতে পেরেছেন

ইনভেস্ট ছাড়াই ভিডিও এডিটিং করে ইনকাম করার উপায় সম্পর্কে জানতে এখানে প্রবেশ করুন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

জমি বন্ধক রাখার ব্যাপারে ইসলামের নির্দেশনা কি

আপডেট সময় : ০৫:৫৪:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪

প্রাচীনকাল থেকেই জরুরি প্রয়োজনে জমি বন্ধক রাখার প্রচলন রয়েছে। এই পদ্ধতি ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে বৈধ। তবে মানতে হবে বেশকিছু নীতিমালা। আপনি যদি এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে নিচের পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

আমাদের জরুরী টাকার প্রয়োজনে অনেক সময় জমি কিংবা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সম্পত্তি বন্ধক রাখি। তারপর পরিস্থিতি ভালো হলে টাকার বিনিময়ে সেগুলো ফেরত নেই। বাংলাদেশ ও পৃথিবীর সকল স্থানেই এই প্রথা প্রচলিত রয়েছে।

এই পদ্ধতির বিষয়ে মহান আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেন, আর তোমরা যদি প্রবাসে থাকো (এখানে দেশের বাইরে অবস্থান করা বোঝানো হয়েছে), যদি কোন লেখক না পাও, তবে বন্ধকী বস্তু সমূহ হস্তগত করে রাখা উচিত। এজন্য একে অপরকে বিশ্বাস করতে পারো। এ ব্যাপারে যাকে বিশ্বাস করা হয় তার উচিত অন্যের প্রাপ্য অবশ্যই পরিশোধ করা এবং নিজের স্বীয় পালনকর্তাকে ভয় পাওয়া। তোমরা সাক্ষ্য গোপন রেখো না। কিন্তু কেউ যদি তা করে তাহলে তার অন্তর গুনাহ দ্বারা পূর্ণ হবে। মহান আল্লাহতালা সবকিছুর ব্যাপারেই অবগত আছেন। (সূরা বাকারা; ২৮৩)

আমাদের নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও বন্ধক-সুবিধা গ্রহণ করেছেন বলে বিভিন্ন হাদিসে রয়েছে। এমনকি হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসুল (সা.) একজন ইহুদীর নিকট হতে বাকিতে খাবার কিনেছিলেন। আর এজন্য নিজে বর্মকে বন্ধক রেখেছিলেন জামিন হিসেবে।

উপরোক্ত হাদিস গুলোর আলোকে আমরা এটা বলতে পারি যে জমি বন্ধক রাখা জায়েজ রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে দুটি পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। প্রথম পদ্ধতি অনুযায়ী যিনি জমি গ্রহণ করবেন তিনি সেটি ভাড়া হিসেবে নিবেন। কিছু টাকা প্রতি মাসে ভাড়া হিসেবে নির্দিষ্ট করবেন যেমন ৫০ টাকা কিংবা ১০০ টাকা। আর অগ্রিম ভাড়া হিসেবে প্রদান করবেন চুক্তি অনুযায়ী ১/২/৩ লাখ টাকা।

জমি বন্ধক রাখার ব্যাপারে ইসলামের নির্দেশনা কি

তারপর জমির মালিক সেটি ফেরত নিতে চাইলে শুধুমাত্র নামমাত্র যে ভাড়াটি নির্ধারণ করা হয়েছিল সেটি রেখে বাকি টাকা ফেরত দেবেন জমির ভাড়াটিয়া কে।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আপনার একটি জমি রয়েছে আর আপনার প্রয়োজন ৫ লক্ষ টাকা। আপনি এক ব্যক্তির সাথে চুক্তি করলেন যে, তিনি আপনাকে জমিটি রেখে প্রতি মাসে ১০০ টাকা করে ভাড়া প্রদান করবেন। আর অনেক সময়ের ভাড়া অগ্রিম হিসেবে ৫ লক্ষ টাকা দিবেন। আর যখন আপনি অগ্রিম ৫ লক্ষ টাকা শোধ করতে পারবেন তখন জমিটি আপনাকে ফেরত দেবে। যদি ২ মাস তিনি জমিটি ফেরত নেন তাহলে প্রতি মাসের ভাড়া ১০০ টাকা করে ২০০ টাকা রেখে দেবেন।

আর ইসলামের জমি বন্ধক রাখার দ্বিতীয় পদ্ধতি হলো চুক্তি করা। এটি ক্রয় বিক্রয় টাইপের চুক্তি। অর্থাৎ এক লক্ষ বা দুই লক্ষ নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে জমিটি অপরজনকে দিয়ে দিবেন অনেকটা বিক্রির মত করে। তারপর পুনরায় কিছুদিন পর সামর্থ্য হলে যেটাকে বিক্রি করেছিলেন ঠিক সেই টাকাই আগের মালিক ক্রয় করে নিবেন।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ধরুন আপনার একটি জমি রয়েছে। আপনি সেটাই বন্ধক রেখে এক লক্ষ টাকা নিতে চাচ্ছেন। এখন আপনি একজন ব্যক্তির সাথে চুক্তি করবেন সেটি বিক্রয়। দাম নির্ধারণ করা হবে এক লক্ষ টাকা। এর বিনিময়ে তার কাছে আপনি স্বল্প কিংবা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জমিতে বিক্রি করবেন। চুক্তিনামায় উল্লেখ থাকবে যেদিন আপনি এই এক লক্ষ টাকা পরিশোধ করতে পারবেন সেদিন তিনি আপনাকে জমি ফেরত দিয়ে দিবে।

আশা করি ইসলামিক শরীয়তের নিয়মে জমি বন্ধক রাখা জায়েজ কিনা এবং এর পদ্ধতি গুলো কি কি সে সম্পর্কে আপনারা সুস্পষ্ট ভাবে জানতে পেরেছেন

ইনভেস্ট ছাড়াই ভিডিও এডিটিং করে ইনকাম করার উপায় সম্পর্কে জানতে এখানে প্রবেশ করুন।