খুব শীঘ্রই আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ডানা
- আপডেট সময় : ০৯:৩০:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪ ৪২ বার পড়া হয়েছে
গত শুক্রবার নিম্নচাপের প্রভাবে সারাদেশে বেশ খানিকটা বৃষ্টিপাত হয়েছে। একদিনে সেই বৃষ্টিপাতের রেশ না কাটতেই আবার একটি লঘু চাপ তৈরির সম্ভাবনা পাওয়া গেছে বঙ্গোপসাগর এলাকায়। আবহাওয়াবিদরা আশঙ্কা করছেন এই লঘু চাপটি পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারেন। তারপরে আঘাত হানতে পারে পশ্চিমবঙ্গ এবং খুলনা বিভাগের বেশিরভাগ এলাকায়। এটির নাম করণ করা হয়েছে ঘূর্ণিঝড় ডানা নামে। মূলত কাতার দেশের পক্ষ থেকে এই নামটি নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদরা বিবৃতিতে বলেছেন, আসছে সোমবার কিংবা মঙ্গলবারে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে পারে এই লঘু চাপটি। যদি এটি পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেয় তাহলে আগামী ২৪ থেকে ২৬ শে অক্টোবর পর্যন্ত আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত করে বলতে পারেনি আবহাওয়া অধিদপ্তর।
কানাডার আবহাওয়াবিদ এবং গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ সাংবাদিকদের কে জানান, আগামী ২৪ থেকে ২৬ তারিখের মধ্যে এই ঘূর্ণিঝড় ডানা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং খুলনা বিভাগের বেশ কিছু এলাকার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। যার পরিপ্রেক্ষিতে কৃষক এবং জন মালের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আগে থেকে সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ ওমর ফারুক জানান, পর্যবেক্ষণ করে এখন পর্যন্ত যে তথ্য গুলি পাওয়া গেছে তারপরে প্রেক্ষিতে এটি ভারতের উড়িষ্যা বা পশ্চিমবঙ্গের দিকেই প্রবাহিত হতে পারে। তবে যে কোন সময় ঘূর্ণিঝড় ডানার গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে সেটাই বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার আঘাত হানতে পারে। সে ব্যাপারে নিয়মিত পূর্বভাস প্রদান করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
খুব শীঘ্রই আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ডানা
তবে দেশজুড়ে বৃষ্টিপাতের ব্যাপারে তিনি আরো বলেছে, শুক্রবারের পরে শনিবার কিংবা রবিবারেও দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাতের ধারা অব্যাহত থাকতে পারে। তারপর পরবর্তী দুই-তিন দিনের মধ্যে আর বৃষ্টি হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। বঙ্গোপসাগরে লঘু চাপ তৈরি হওয়ার পরে পরবর্তীতে আবারো বৃষ্টিপাত শুরু হতে পারে।
সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড়রে রেমাল বাংলাদেশের উপকূলে এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে আঘাত হানে। সে সময় সারা দেশ জুড়ে প্রচুর বৃষ্টিপাত এবং নিম্নচাপ তৈরি হয়েছিল। এবার ঘূর্ণিঝড় ডানা এর আঘাতে যাতে ক্ষয়ক্ষতি কম হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এবং সর্তকতা আগে থেকে জারি করা হবে।
ঘূর্ণিঝড়ে সতর্কতা
কথায় প্রচলিত আছে প্রতিকারের চাইতে প্রতিরোধ উত্তম। এর মানে হচ্ছে কোন একটি পরিস্থিতিতে পড়ে সেটি সমাধান করার চাইতে যেন পরিস্থিতি খারাপ না হয় সেটির জন্য আগে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ঠিক তেমনিভাবে যেকোনো অপরাধের দুর্যোগের জন্য সর্বক্ষণের সচেতনতা অবলম্বন করা উচিত।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সাধারণত ৩৬ থেকে ৭২ ঘন্টা আগেই বিভিন্ন দুর্যোগ সম্পর্কে সতর্কতা পাওয়া যায়। আর ঘূর্ণিঝড় ডানা এর ক্ষেত্রে তো দুই থেকে চার দিন আগেই খবর প্রচার করা হচ্ছে। তাই আপনি আগাম ব্যবস্থা হিসেবে বাড়ির বয়স্ক, প্রতিবন্ধী, শিশু ইত্যাদি পরনির্ভরশীল ব্যক্তিদেরকে আগে নিরাপদ স্থানে পাঠিয়ে দিতে পারেন। বিশেষ করে দূরের কোন আত্মীয়-স্বজন যাদের এলাকায় খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।
এছাড়াও নিজেদের খাবার জন্য বিশুদ্ধ জল, শুকনো খাবার, প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম ইত্যাদি আগে থেকেই জোগাড় করে রাখা ভালো। এতে করে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে জীবন রক্ষা করতে পারবেন।
যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিজের প্রস্তুতি নেওয়ার পাশাপাশি আশেপাশের পাড়া প্রতিবেশীদেরও এ ব্যাপারে সতর্ক করুন। প্রত্যেকের কাছে এই বার্তা পৌঁছাতে পেরেছে কিনা ব্যাপারে নিশ্চিত করুন। এর জন্য বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করতে পারেন। যেহেতু দুর্যোগ কালীন সময়ে মোবাইলের নেটওয়ার্কিং বা বিদ্যুৎ বিভ্রাট এর মত সমস্যা দেখা দেয় তাই আগাম সতর্কবার্তা পৌঁছে দেওয়াই সবচাইতে উত্তম পদ্ধতি। আবহাওয়া সংবাদের মতে ঘূর্ণিঝড় ডানা আগামী ২৪ থেকে ২৬ তারিখে মধ্য বাংলাদেশের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে খুলনার উপর শুধুমাত্র প্রভাব থাকলেও পরবর্তীতে এটির বিস্তার আরও বাড়তে পারে।
প্রফেশনাল সিভি তৈরি করার নিয়ম, বিস্তারিত জানতে এখানে প্রবেশ করুন।