ঢাকা ০৯:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোন সময় চুপ থাকা বুদ্ধিমানের কাজ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:২৬:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৩ বার পড়া হয়েছে

কোন সময় চুপ থাকা বুদ্ধিমানের কাজ

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জীবনের অনেক সময় কথা বলা যেমন জরুরী ঠিক তেমনি ভাবে অনেক সময় চুপ থাকাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের এমন অনেক সময় আসে যে সময় গুলোতে কথা না বলা কিংবা নীরব থাকা ভবিষ্যতের জন্য ভালো। এজন্যই চীনা দার্শনিক লাওজে বলেছেন নীরবতা শক্তিরই আরেকটি রুপ মাত্র।

তাই চলুন জেনে নেই কোন সময় চুপ থাকায় বুদ্ধিমানের কাজ

অতিরিক্ত রেগে গেলে

কথায় আছে রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন। রাগের সকল সমস্যার সমাধান হয় না কিংবা সব পরিস্থিতিতে জেতা যায় না। কারণ রাগ কিংবা আবেগের বশবর্তী হয়ে মানুষ বেশিরভাগ সিদ্ধান্তই ভুল করে ফেলে। অবশ্য পরিস্থিতি বুঝে কিছুটা রাগ করার স্বাভাবিক ব্যাপার কিন্তু সেটা যেন বিব্রতকর পর্যায়ে গিয়ে না ঠেকে।

তাই যখন বুঝতে পারবেন আপনি অনেক বেশি রেগে গেছেন যথা সম্ভব শান্ত থাকুন এবং সেই স্থান দ্রুত ত্যাগ করে চলে যান। পরবর্তীতে মেজাজ ঠান্ডা হলে সে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করুন।

কোন বিষয়ে পরিপূর্ণ জানা না থাকলে

কোন সময়ে চুপ থাকা বুদ্ধিমানের কাজ এর কিছু ব্যাপার আমরা অবশ্যই বাস্তব জীবনে উপলব্ধি করেছি। ধরুন আপনি কোন একটি আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। কিন্তু আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে আপনার পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই। এরকম পরিস্থিতিতে যথা সম্ভব চুপ থাকার চেষ্টা করুন। কারণ পর্যাপ্ত জ্ঞান না নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা যা করতে গেলে বিপরীত হতে পারে।

শোকার্ত মানুষের সামনে

আমরা অনেক সময় শোকাহত মানুষকে সান্তনা দিতে গিয়ে বেশি কথা বলে ফেলি। যার মধ্যে বেশিরভাগই হয়ে ওঠে অহেতুক এবং অপ্রাসঙ্গিক কথাবার্তা।

একজন মানুষ যখন শোকার্ত অবস্থায় থাকে কিংবা দুঃখে পতিত হয় তখন সাধারণত কোন ধরনের সান্ত্বনাই তার কাজে আসে না। তাই এধরনের মানুষের পাশে গিয়ে অপ্রাসঙ্গিক কথা বলে অযথা বিরক্ত করবেন না।

কোন বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয় স্বজনদের কেউ মারা গেলে কিংবা কোন দুর্ঘটনা ঘটলে তাকে প্রশ্নের জর্জরিত না করে তাদের সঙ্গ দেওয়ার চেষ্টা করুন।

কোন সময় চুপ থাকা বুদ্ধিমানের কাজ

কেউ সমালোচনা করলে

কোন সময়ে চুপ থাকে বুদ্ধিমানের? যখন কেউ আপনার সমালোচনা করে তখন যথা সম্ভব শান্ত থাকুন এবং কোন প্রতি উত্তর দিতে যাবেন না।

কারণ আমাদের কম বেশি সবারই সমালোচনা সহ্য করতে হয় এবং এটি একটি সামাজিক ব্যাধি। আপনি যখন সমালোচনার বিপরীতে প্রতি উত্তর দিতে যাবেন তখন তর্ক লেগে যাবে। তাই এইগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।

অফিসে বিভিন্ন রকম আলোচনা

আমাদের কর্মস্থলে টুকটাক বিভিন্ন রকম আলোচনা এবং সমালোচনা হয়ে থাকে। বিশেষ করে অন্য কারো ভুল কিংবা ভ্রান্তি নিয়ে আমরা আলোচনা করতে বেশি পছন্দ করি।

কিন্তু আপনি যদি একজন স্মার্ট লোক হিসেবে নিজেকে বিবেচনা করেন তাহলে এই ধরনের আলোচনায় অংশ নেওয়া একদমই উচিত নয়।

ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা

আমরা অনেক জীবনের বিশেষ কিছু মুহূর্ত দুঃখ কষ্টের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করি। আবেগের বশবর্তী হয়ে এই সকল মুহূর্তের অভিজ্ঞতা গুলো বন্ধু-বান্ধব কিংবা আত্মীয়-স্বজনদের কাছে বুঝে না বুঝেই শেয়ার করি। কিন্তু নিজের এই কথাগুলি আরেকজনের কাছে বলা একদমই উচিত নয়। এতে করে ভবিষ্যতে আপনার বিপরীতে সেই কথা গুলি ব্যবহার হতে পারে।

অভিভাবক এবং মুরুব্বীদের সামনে

পারিবারিকভাবে কিংবা সামাজিকভাবে আমরা অনেক সময় আমাদের মুরুব্বী এবং অভিভাবকদের সাথে আলোচনাযর সম্মুখীন হয়। আমাদের সমাজে এমন কিছু ছেলে মেয়ে আছে যারা এদের সামনে নিজের জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতাকে জাহির করার চেষ্টা করে এবং সবার উপরে কথা বলার চেষ্টা করে। কিন্তু এটা করা কখনই উচিত নয়।

কারণ আমাদের অভিভাবক এবং মুরুব্বীরা যথেষ্ট অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। আপনি যত বেশি জ্ঞানী হোক না কেন কিংবা যত বেশি অভিজ্ঞতা থাকুক না কেন এদের সামনে যথাসম্ভব চুপ থেকে কথা শোনার চেষ্টা করুন।

উপসংহার

কথা দিয়ে পৃথিবীর জয় করা যায় আবার সেই কথা দিয়েই অনেক বড় দুর্ঘটনা ঘটানো যায়। তরবারির আঘাতের চাইতে কথার আঘাত সবচাইতে বেশি শক্তিশালী। তাই বিভিন্ন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে চুপ থাকার চেষ্টা করুন। আপনি যত বেশি শান্ত এবং কম কথা বলবেন আপনার মানসিক চাপও তত কম অনুভূত হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

কোন সময় চুপ থাকা বুদ্ধিমানের কাজ

আপডেট সময় : ০৫:২৬:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

জীবনের অনেক সময় কথা বলা যেমন জরুরী ঠিক তেমনি ভাবে অনেক সময় চুপ থাকাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের এমন অনেক সময় আসে যে সময় গুলোতে কথা না বলা কিংবা নীরব থাকা ভবিষ্যতের জন্য ভালো। এজন্যই চীনা দার্শনিক লাওজে বলেছেন নীরবতা শক্তিরই আরেকটি রুপ মাত্র।

তাই চলুন জেনে নেই কোন সময় চুপ থাকায় বুদ্ধিমানের কাজ

অতিরিক্ত রেগে গেলে

কথায় আছে রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন। রাগের সকল সমস্যার সমাধান হয় না কিংবা সব পরিস্থিতিতে জেতা যায় না। কারণ রাগ কিংবা আবেগের বশবর্তী হয়ে মানুষ বেশিরভাগ সিদ্ধান্তই ভুল করে ফেলে। অবশ্য পরিস্থিতি বুঝে কিছুটা রাগ করার স্বাভাবিক ব্যাপার কিন্তু সেটা যেন বিব্রতকর পর্যায়ে গিয়ে না ঠেকে।

তাই যখন বুঝতে পারবেন আপনি অনেক বেশি রেগে গেছেন যথা সম্ভব শান্ত থাকুন এবং সেই স্থান দ্রুত ত্যাগ করে চলে যান। পরবর্তীতে মেজাজ ঠান্ডা হলে সে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করুন।

কোন বিষয়ে পরিপূর্ণ জানা না থাকলে

কোন সময়ে চুপ থাকা বুদ্ধিমানের কাজ এর কিছু ব্যাপার আমরা অবশ্যই বাস্তব জীবনে উপলব্ধি করেছি। ধরুন আপনি কোন একটি আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। কিন্তু আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে আপনার পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই। এরকম পরিস্থিতিতে যথা সম্ভব চুপ থাকার চেষ্টা করুন। কারণ পর্যাপ্ত জ্ঞান না নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা যা করতে গেলে বিপরীত হতে পারে।

শোকার্ত মানুষের সামনে

আমরা অনেক সময় শোকাহত মানুষকে সান্তনা দিতে গিয়ে বেশি কথা বলে ফেলি। যার মধ্যে বেশিরভাগই হয়ে ওঠে অহেতুক এবং অপ্রাসঙ্গিক কথাবার্তা।

একজন মানুষ যখন শোকার্ত অবস্থায় থাকে কিংবা দুঃখে পতিত হয় তখন সাধারণত কোন ধরনের সান্ত্বনাই তার কাজে আসে না। তাই এধরনের মানুষের পাশে গিয়ে অপ্রাসঙ্গিক কথা বলে অযথা বিরক্ত করবেন না।

কোন বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয় স্বজনদের কেউ মারা গেলে কিংবা কোন দুর্ঘটনা ঘটলে তাকে প্রশ্নের জর্জরিত না করে তাদের সঙ্গ দেওয়ার চেষ্টা করুন।

কোন সময় চুপ থাকা বুদ্ধিমানের কাজ

কেউ সমালোচনা করলে

কোন সময়ে চুপ থাকে বুদ্ধিমানের? যখন কেউ আপনার সমালোচনা করে তখন যথা সম্ভব শান্ত থাকুন এবং কোন প্রতি উত্তর দিতে যাবেন না।

কারণ আমাদের কম বেশি সবারই সমালোচনা সহ্য করতে হয় এবং এটি একটি সামাজিক ব্যাধি। আপনি যখন সমালোচনার বিপরীতে প্রতি উত্তর দিতে যাবেন তখন তর্ক লেগে যাবে। তাই এইগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।

অফিসে বিভিন্ন রকম আলোচনা

আমাদের কর্মস্থলে টুকটাক বিভিন্ন রকম আলোচনা এবং সমালোচনা হয়ে থাকে। বিশেষ করে অন্য কারো ভুল কিংবা ভ্রান্তি নিয়ে আমরা আলোচনা করতে বেশি পছন্দ করি।

কিন্তু আপনি যদি একজন স্মার্ট লোক হিসেবে নিজেকে বিবেচনা করেন তাহলে এই ধরনের আলোচনায় অংশ নেওয়া একদমই উচিত নয়।

ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা

আমরা অনেক জীবনের বিশেষ কিছু মুহূর্ত দুঃখ কষ্টের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করি। আবেগের বশবর্তী হয়ে এই সকল মুহূর্তের অভিজ্ঞতা গুলো বন্ধু-বান্ধব কিংবা আত্মীয়-স্বজনদের কাছে বুঝে না বুঝেই শেয়ার করি। কিন্তু নিজের এই কথাগুলি আরেকজনের কাছে বলা একদমই উচিত নয়। এতে করে ভবিষ্যতে আপনার বিপরীতে সেই কথা গুলি ব্যবহার হতে পারে।

অভিভাবক এবং মুরুব্বীদের সামনে

পারিবারিকভাবে কিংবা সামাজিকভাবে আমরা অনেক সময় আমাদের মুরুব্বী এবং অভিভাবকদের সাথে আলোচনাযর সম্মুখীন হয়। আমাদের সমাজে এমন কিছু ছেলে মেয়ে আছে যারা এদের সামনে নিজের জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতাকে জাহির করার চেষ্টা করে এবং সবার উপরে কথা বলার চেষ্টা করে। কিন্তু এটা করা কখনই উচিত নয়।

কারণ আমাদের অভিভাবক এবং মুরুব্বীরা যথেষ্ট অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। আপনি যত বেশি জ্ঞানী হোক না কেন কিংবা যত বেশি অভিজ্ঞতা থাকুক না কেন এদের সামনে যথাসম্ভব চুপ থেকে কথা শোনার চেষ্টা করুন।

উপসংহার

কথা দিয়ে পৃথিবীর জয় করা যায় আবার সেই কথা দিয়েই অনেক বড় দুর্ঘটনা ঘটানো যায়। তরবারির আঘাতের চাইতে কথার আঘাত সবচাইতে বেশি শক্তিশালী। তাই বিভিন্ন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে চুপ থাকার চেষ্টা করুন। আপনি যত বেশি শান্ত এবং কম কথা বলবেন আপনার মানসিক চাপও তত কম অনুভূত হবে।